মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় এসআইকে শোকজ
দশ বছর আগে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার বাসে অগ্নিকাণ্ডের মামলায় আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ মিয়া। এ ঘটনায় ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হকের আদালত গত ২৪ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানায় কর্মরত ওই কর্মকর্তাকে শোকজ করেন। এ ছাড়া শপথ গ্রহণের পরও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সাত কার্য দিবসের মধ্যে সে কারণ দর্শানোর নির্দেশও দেওয়া হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে ১৯ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানাধীন এলাকায় বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর পুলিশ বাদীর বিরুদ্ধে মামলা করে। এ মামলার তদন্ত শেষে আদালতে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পলাতক চার আসামির অনুপস্থিতিতে শুরু হয় মামলায় বিচার। পরে মামলাটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে বদলি করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় মামলার বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ রোববার এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন এসআই আশরাফ মিয়া। তিনি আসামি পক্ষের জেরায় এ মামলার জিম্মা গ্রহণকারী টিটু হাওলাদারের জবানবন্দি গ্রহণ না করলেও সিডি দেখে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন যে, টিটু হাওলাদার সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি সূচিপত্র দেখেও মিথ্যা সাক্ষ্য দেন। প্রকৃতপক্ষে সূচিপত্রের খ, জ এবং ঞ স্থানের কাউকে সাক্ষী করা হয়নি। এরপর আদালত ওই কর্মকর্তাকে শোকজ করেন। আদেশে বিচারক বলেন, সাক্ষীর এমন মিথ্যা তথ্য প্রদান আসামি কর্তৃক আদালত প্রভাবিত হওয়ার শামিল। তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে সিডি এবং নথি দেখে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান আদালতে শপথ গ্রহণ করে মিথ্যা তথ্য প্রদানের শামিল, যা পেনাল কোডের ১৯৩ ধারা মতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুজ্জামান দৈনিক কালবেলাকে বলেন, কাউকে শোকজ করা হয়েছে কি না, বলতে পারি না। নথি না দেখে কিছু বলতে পারব না। আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্যের সময় যে জবানবন্দি দেন, তার সঙ্গে এজাহার ও চার্জশিটের কোনো মিল ছিল না। মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় তাকে শোকজ করেছেন আদালত।