প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাসায় ডেকে টাকা আদায়, ৩ নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার
প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাসায় ডেকে নিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায়ে জড়িত অভিযোগে একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মিরপুর ২ নম্বর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন খাদিজা বেগম (২৭), মো. হাদিউল ইসলাম ওরফে বাবু (৩৪), মুনমুন আক্তার (৩০) ও ওয়াসফিয়া খানম (২৬)।
পুলিশ বলেছে, বাবু, মুনমুন ও ওয়াসফিয়া তাঁদের ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর দিয়ে চক্রের নামের রাখেন ‘বিএমডব্লিউ’। তাঁরা অপরাধজগতে এই নামেই পরিচিত। বাবু ব্যবসায়ী, খাদিজা ও মুনমুন গৃহিণী এবং ওয়াসফিয়া একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়েন বলে দাবি করেন। ওয়াসফিয়া এই চক্রের হোতা। তিনিই মূলত বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে অনলাইনে বা সরাসরি বন্ধুত্ব করেন। তাঁদের মধ্যে যেকোনো একজন নারী আর্থিক সহযোগিতা চাওয়ার নামে নিশানা করা ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হন। যেহেতু মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সহযোগিতা করবেন, সেই কারণে তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি জেনে নেন চক্রের ওই সদস্য। এরপর সেই নম্বরে নিয়মিত যোগাযোগ করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে নিশানা করা ব্যক্তিকে চক্রের সদস্যদের বাসায় ডেকে আনা হয়। বাসায় এলে চক্রের অন্য সদস্যরা মারধর করে টাকা ও মুঠোফোন নিয়ে নেন। এ সময় নারী সদস্যরা ওই পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তোলেন। এরপর সেই ছবি ওই ব্যক্তির স্ত্রী কিংবা পরিবারের কাছে পাঠিয়ে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেন তাঁরা। টাকা না দিলে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়। উপায়ন্তর না দেখে এবং সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়ে ভুক্তভোগীরা টাকা দিয়ে দেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মহসীন বলেন, দেড় মাস আগে একটি বেসরকারি সংস্থার এক কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন চক্রের সদস্য খাদিজা। বাবা অসুস্থ বলে তিনি এই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রথমে ২০০ টাকা নেন। এই টাকা নেওয়ার মাধ্যমেই পরিচিত হন। এরপর বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে সম্পর্ক গভীর করেন। একপর্যায়ে গতকাল তাঁকে বাসায় ডাকেন খাদিজা। বাসায় আগে থেকেই ছিলেন বাবু, মুনমুন ও ওয়াসফিয়া। তিনি বাসায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বেঁধে মারধর করে মুঠোফোন ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে নেন। এরপর চক্রের সদস্যরা তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। শেষমেশ ১০ হাজার ২০০ টাকায় রফা হয় তাঁদের মধ্যে। টাকা নিয়ে রাতে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়ার সময় তিনি চিৎকার দেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে চক্রটির সদস্যদের আটক করেন। পরে মিরপুর মডেল থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।