শিডিউল না পাওয়ায় শাকিব খানের বিরুদ্ধে প্রযোজকের মামলার প্রস্তুতি
এখন ক্যারিয়ারের তুঙ্গে শাকিব খান। সর্বশেষ সিনেমা ‘প্রিয়তমা’ হিট হওয়ায় এখন পারিশ্রমিকও বাড়িয়ে করেছেন কোটি টাকা। করছেন নতুন নতুন সিনেমায় চুক্তি। কিন্তু শেষ করছেন না আগে থেকে আটকে থাকা বেশ কয়েকটি সিনেমার কাজ। এসব সিনেমার শুটিং শেষ হয়েছে ২০ থেকে ৮৫ ভাগ। কিন্তু শিডিউল জটিলতার কারণে শেষ করা যাচ্ছে না বাকি কাজ।
এতে লোকসানে পড়েছেন প্রযোজকেরা। এই ক্ষতির জন্য শাকিব খানকে দায়ী করেছেন এসব সিনেমার প্রযোজক ও পরিচালকরা। লোকসানের মুখে পড়ে প্রযোজকদের কেউ কেউ ইঙ্গিত দিলেন, শাকিব খানের নামে মামলা করতে পারেন তাঁরা।
২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে নিয়ে ‘মাই ডার্লিং’ সিনেমার শুটিং শুরু করেন পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে ছবির ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়। এরপরই সিনেমাটি আটকে যায়। কোনোভাবেই নায়ক-নায়িকার শিডিউল পাওয়া যাচ্ছিল না। বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও শাকিব খান বাকি শুটিং শেষ না করায় ২০১৮ সালের ছবির প্রযোজক মনিরুজ্জামান চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ও শিল্পী সমিতি বরাবর শাকিব-অপুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি।
এ প্রসঙ্গে দেশের একটি গণমাধ্যমকে প্রযোজক মনিরুজ্জমান বলেন, ‘আমি ২০১৮ সালে যখন সমিতিগুলোর কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম, তখনই বলেছিলাম সমিতি মীমাংসা করে না দিলে বিষয়টি নিয়ে শাকিবের বিরুদ্ধে আদালতে যাব। কিন্তু ওই সময় অপু বিশ্বাস শিডিউল দিলেও শাকিব দেননি। সে সময় শাকিব খান নায়িকা পরিবর্তন করে অন্য নায়িকা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এমনকি বুবলীকেও নেওয়ার কথা বলেছিলেন। যদি তা না হয়, নায়ক-নায়িকার আলাদা আলাদা শট নিয়ে শুটিং শেষ করতে বলেছিলেন শাকিব খান। কিন্তু ছবিটির শুটিং আগে যতটুকু, যেভাবে হয়েছিল, নায়িকা পরিবর্তন করা বা আলাদা করে শট নেওয়া সম্ভব ছিল না। নায়িকা পরিবর্তন করলে সব ফুটেজ ফেলে দিয়ে নতুন করে পুরো শুটিংই করতে হতো। এতে দ্বিগুণ টাকা খরচ হতো। এতে রাজি না হওয়ায় শাকিবের আর শিডিউল পাওয়া যায়নি। ফলে আর কাজটি হয়নি।’
এই প্রযোজকের ভাষ্য, শাকিবের তখন পারিশ্রমিক ১৫ লাখ টাকা ছিল। শুটিং শুরুর আগে এক চেকেই পুরো টাকা দিয়েছিলাম। প্রায় ৭০ ভাগ কাজ করার পর শাকিব-অপুর কারণে শুটিং আটকে গেল। প্রায় পাঁচ বছর শুটিং শেষ করে দেওয়ার কথা বলে চুক্তির বাইরেও শাকিব খান আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। আমি পাঁচ লাখ টাকা ছবির আরেক শিল্পী অমিত হাসানের মাধ্যমে পরিশোধ করেছিলাম। এরপরও শাকিব খান শিডিউল দেওয়ার অঙ্গীকার রাখেননি। সেই পাঁচ লাখ টাকা ফেরতও দেননি।’ প্রযোজক জানালেন, এই ছবির শুটিং শেষ না করে দেওয়ায় ১০ বছর ধরে তাঁর প্রায় কোটি টাকা আটকে আছে।
শাকিবের বিরুদ্ধে মামলা করার ইঙ্গিত দিয়ে এই প্রযোজক বলেন, ‘সামনে সপ্তাহে চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে যাওয়ার কথা আছে। ফিরে একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার কাছে লিখিত সব ডকুমেন্টস আছে। মামলা করব। আর বাড়তি দেওয়া পাঁচ লাখ টাকাও আমাকে ফেরত দিতে হবে শাকিবকে।’
মেঘমালা কথাচিত্র প্রযোজিত ও জি সরকার পরিচালিত ‘লাভ ২০১৪’ ছবিটির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। ২০১৪ সালে শুটিং শুরু হওয়া ছবিটির কাজ আজও শেষ হয়নি। পরের ধাপে গানসহ কিছু দৃশ্যের চিত্রায়ণ হওয়ার কথা ছিল মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে। পরিচালক সূত্রে জানা গেছে, ছবির কাজ ৫০ ভাগ শেষ হয়েছে। শাকিব খানের শিডিউলের আশায় অনেক বছর শুটিং বন্ধ আছে ছবিটির।
শাকিব খান ও শাবনূরকে নিয়ে ২০০৮ সালে নজরুল ইসলাম খান শুরু করেন ‘স্বপ্নের বিদেশ’। ২০০৯ সালের শুরুর দিকে সিনেমার প্রায় ৮৫ ভাগ শেষ হয়। এরপর ১৫ বছর কেটে গেলেও বাকি ১৫ ভাগ কাজ আটকে আছে। এভাবেই আটকে আছে আরও বেশ কয়েকটি সিনেমার শুটিং।