Home অপরাধ চুরির ঘটনা ঢাকতে খুন করা হয় রাতুলকে
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩

চুরির ঘটনা ঢাকতে খুন করা হয় রাতুলকে

বাইসাইকেলের জন্য বাবা-মায়ের কাছে আবদার করেছিল আউলিয়াপুর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রাতুল (১০)। ছেলের আবদার না মেটানোর সুযোগ নেন প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন মাতব্বর। দশ বছর বয়সি রাতুলকে ১৪ হাজার টাকায় সাইকেল দিয়ে রাতুলের বাবার ব্যবসায়িক মালামাল চুরির কৌশলে লিপ্ত আনোয়ার ও তার সহযোগী হানিফ হাওলাদার।

পরে রাতুলের মাধ্যমে তার পরিবারের সদস্যদের চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে মালামাল চুরি করে তারা। পরে চুরির ঘটনা ঢাকতে রাতুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখে। এমন একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পটুয়াখালী পুলিশ।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর ২টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি মো. সাইদুল ইসলাম এমন তথ্য নিশ্চিত করেন। পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট আউলিয়াপুরে এমন ঘটনা ঘটে।

ঘটনার বরাত দিয়ে এসপি বলেন-‘বেশ কিছু দিন থেকেই রাতুল তার বাবা-মায়ের কাছে সাইকেল কেনার বায়না করছিল, কিন্তু সঙ্গত কারণে রাতুলকে সাইকেল দেয়নি পরিবার। সাইকেল সংক্রান্ত খবরটি জানতে পারেন  প্রতিবেশী মো. আনোয়ার হোসেন (৪৫) এবং পরে তার ঘনিষ্ঠ মো. হানিফ হাওলাদারের (৪১) সঙ্গে আলোচনা করে রাতুলের বাবার ব্যবসায়িক মালামাল চুরির পরিকল্পনা করে তারা। এর পর রাতুলকে দামি সাইকেল দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাগে নেয়। রাতুলের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে রাজি করায় আনোয়ার ও হানিফ। ঘটনায় জড়িত আনোয়ার হোসেন গাছকাটা শ্রমিক এবং হানিফ হাওলাদার নদীতে মাছ ধরে জীবিকা র্নিবাহ করে। রাতুলকে ১৪ হাজার টাকায় সাইকেল কিনে দিয়ে তার বাবা গোলাম রহমান লিটনের অটোরিকশার তিনটি ব্যাটারি খুলে নেওয়ার চুক্তি করেন তারা।

এসপি আরও বলেন, চুক্তি অনুযায়ী গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাতুলকে দিয়ে তার বাবা গোলাম রহমান লিটন (৪৫) এবং মা মোসা. আছমা বেগম (৩০) এবং রাতুলের বৃদ্ধ দাদি রিজিয়া বেগমকে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে তারা। পরিবারের ঘুম নিশ্চিত করে গভীর রাতে বসতঘরের পেছনের দরজা দিয়ে ঘরসংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে তারা। চুক্তি অনুযায়ী শুধু অটোরিকশার ব্যাটারি নেওয়ার কথা থাকলেও রাতুলের বাবার ডেকোরেটরের মালামাল এবং সাউন্ড সিস্টেমসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয় তারা।

চুরি হওয়া এসব মালামাল নিয়ে নৌকায় চেপে রওনা দিতে গেলে অপকর্মের স্বাক্ষী হিসেবে ক্ষতিগ্রস্থ গোলাম রহমানের ছেলে রাতুলের বিষয়টি মাথায় চেপে বসে তাদের। এরপর তারা পুনরায় রাতুলের ঘরে ঢুকে রাতুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ওই রাতেই জয়নাল বিশ্বাসের পরিত্যক্ত ঘরের মাটি খুঁড়ে এবং দুর্গন্ধ এড়াতে রাতুলের গায়ে লবণ মেখে পলিথিনে মুড়িয়ে পুঁতে রাখে রাতুলকে এবং চুরি করা সব মালামাল হানিফ হাওলাদারের বসতঘরের রান্নাঘরের মাটি খুড়ে পুঁতে রাখে তারা। পুলিশ এগুলো উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় রাতুলের বাবা বাদী হয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর একটি মামলা করেছেন।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *