প্রাইভেটকার থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি, যে তথ্য দিলেন ডিবির হারুন
রাজধানীতে প্রাইভেটকার থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনা ঘটেছে গতকাল (সোমবার) রাতে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন জড়িত থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
মঙ্গলবার দুপুরে হারুন তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের বিজি প্রেস এলাকায় সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই গোলাগুলির ঘটনায় ভুবন চন্দ্র শীল (৫৫) নামে এক পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তার মাথার পেছনে গুলি লেগেছে।
এ ছাড়া গুলির ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২ জন। তারা হলেন মামুন (৫৪) ও আরিফুল হক ইমন (৩০)। এই দুজনের মধ্যে আরিফুল পথচারী আর মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী। পুলিশের ধারণা, মামুনকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালিয়েছে অন্য সন্ত্রাসী গ্রুপ।
ডিবিপ্রধান জানান, এই মামুনের পুরো নাম তারিক সাঈদ মামুন। তিনি চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি। এই মামলায় প্রায় ২০ বছর কারাভোগের পর জামিনে বের হন তিনি। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনও সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি। ইমন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
হারুন বলেন, জেলে থাকা অবস্থায় মামুনকে হুমকি দিয়েছিলেন ইমন। ধারণা করা হচ্ছে- ইমনের লোকজন মামুনের ওপর হামলা করেছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে সবকিছুই আসবে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান- মামুন (৫৪), খোকন (৩৭) ও মিঠু (৫২) সোমবার রাতে মগবাজার এলাকার পিয়াসী বার থেকে বের হন। প্রাইভেটকারে তিনজন মামুনের তল্লাবাগের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সিটি পেট্রল পাম্প ও বিজি প্রেসের মাঝামাঝি পৌঁছলে চারটি মোটরসাইকেলে করে সাত–আটজন তাদের থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। মামুনসহ অন্যরা তাৎক্ষণিক প্রাইভেটকার থেকে নেমে পড়লে মোটরসাইকেলে থাকা ব্যক্তিরা মামুনের পিঠে ও ঘাড়ে কুপিয়ে আহত করে। এ সময় পথচারী ভুবন চন্দ্র শিলের মাথায় গুলি লাগে এবং আরও এক পথচারী আরিফুল হক আহত হন। পরে তাদেরকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভাগে নিয়ে আসা হয়।
ওসি আরও বলেন, ভুবন চন্দ্রশীলকে পরে রাজধানীর পপুলার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত মামুন ও আরিফুল ইসলাম চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। আমরা ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ এবং তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচএম আজিজুল হক বলেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। আমরা তদন্তের পাশাপাশি জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা থেকে তিন মাস আগে জামিনে বের হন সন্ত্রাসী মামুন। তার বিরুদ্ধে আলোচিত হিমেল মার্ডার, রহিম মার্ডার, আদালত চত্বরে মোর্শেদ হত্যাকাণ্ড মামলা রয়েছে। এর মধ্যে মোর্শেদ খুনের মামলায় মামুনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। পরে হাইকোর্ট থেকে খালাস পান মামুন।