Home সারাদেশ ভোক্তার অভিযান শেষ হতেই ডিম বেশি দামে বিক্রি
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩

ভোক্তার অভিযান শেষ হতেই ডিম বেশি দামে বিক্রি

ডিম, আলু ও দেশি পেঁয়াজের খুচরা দাম বেঁধে দেওয়ার পর বাজারে বাজারে অভিযান চালাচ্ছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজার তদারকি করছে ভোক্তা অধিদপ্তর, মূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযানও পরিচালনা করছে। তবে তাদের এই অভিযান বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে কতটা ভূমিকা রাখতে পারছে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় পরিচালিত অভিযানের পর আবার পণ্যের মূল্য বেড়ে গেছে এমনটা দেখা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার তিন পণ্যের দাম বেঁধে দিলে শুক্রবার থেকেই বাজারে অভিযান শুরু করে ভোক্তা অধিদপ্তর। এর অংশ হিসেবে গতকাল রোববার রাজধানীর ভাটারার নতুন বাজারে অভিযান চালান সংস্থার কর্মকর্তারা। দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত যখন অভিযান চলে, তখন ওই তিন পণ্যের দাম কম রাখেন বিক্রেতারা। তবে অভিযান শেষ করে কর্মকর্তারা বাজার ছাড়লে আবার দাম বেড়ে যায় এসব পণ্যের।

নতুন বাজারে যখন অভিযান চলে, তখন প্রথম আলোর প্রতিবেদক সেখানে ছিলেন। অভিযান চলাকালে ডিমের ডজন বিক্রি হয় ১৪৪ টাকায়। এটাই সরকারের বেঁধে দেওয়া খুচরা দাম। কিন্তু এক ঘণ্টা পরে ওই একই দোকানে ডিমের দাম ১৫০ টাকা চাওয়া হয়। অভিযানের সময় বিক্রেতারা আলুর দাম কেজি ৪২ টাকা চাইলেও, অভিযান শেষে প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকায় বিক্রি করেন। আলুর বেঁধে দেওয়া দাম অবশ্য ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দামের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে—অভিযানের সময় দেশি পেঁয়াজের দাম রাখা হয় ৭৫ টাকা। অভিযান শেষে সেই পেঁয়াজ ৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। পেঁয়াজের সরকার নির্ধারিত দাম কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা।

অভিযানের সময় আলু ও পেঁয়াজ বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়ার বিষয়টি শর্ত সাপেক্ষে মেনে নেন কর্মকর্তারা। বলেন, পাইকারি বাজার থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা কী দামে পণ্য কিনছেন, তা তাঁরা বিবেচনায় নিচ্ছেন। তবে এ ক্ষেত্রে পাকা রসিদ দেখাতে হচ্ছে।

নতুন বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রোজিনা সুলতানা ও মাগফুর রহমান। তাঁরা চারটি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করার পর অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে বাজারের আশপাশে অবস্থান নেন। অনেকে ত্রিপল দিয়ে মুড়িয়ে দোকান বন্ধ রাখেন। বিষয়টি নিয়ে মাগফুর রহমান বলেন, ‘অভিযান দেখে ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ করে চলে যাওয়ার অর্থ, তাঁরা সহযোগিতা করতে চাইছেন না। এ নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটির সঙ্গে কথা বলব।’

কিছু বিক্রেতা অবশ্য দোকান খোলা রেখেছিলেন, কেউ কেউ ছিলেন উদ্বিগ্ন। অনেকেই কথা বলতে চাননি। তবে মরিয়ম জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযানের সময় অনেকে ঝামেলা এড়াতে দোকান বন্ধ করে চলে যান।’

গত তিন দিনে ভোক্তা অধিদপ্তর সারা দেশে মোট ৩১৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো জরিমানা করেছে। পাকা রসিদ সংরক্ষণ না করা, পণ্যের দাম বেশি রাখা ও মূল্যতালিকায় ত্রুটির মতো অভিযোগ আনা হয় এদের বিরুদ্ধে।

ফরিদপুর ও জয়পুরহাটে জরিমানা

সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু, ডিম ও পেঁয়াজ বিক্রি না করায় ফরিদপুর শহরের চকবাজার এলাকার তিন ব্যবসায়ীকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। এদিকে সরকার বেঁধে দেওয়া দরে আলু বিক্রি না করায় জয়পুরহাটের শিমুলতলী আরবি হিমাগার ফটকে তিন আলু ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। হিমাগার গেটে সরকার নির্ধারিত ২৭ টাকার বদলে ৩৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ব্যবসায়ী মোস্তফা, মোসাদ্দেক হোসেন ও মিজানুর রহমানকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর ও প্রতিনিধি, জয়পুরহাট)

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *