Home বানিজ্য ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান, দোকান বন্ধ করে পালালেন নতুন বাজারের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩

ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান, দোকান বন্ধ করে পালালেন নতুন বাজারের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী

বাজারে ডিম, আলু ও পেঁয়াজের সরকার নির্ধারিত মূল্য তদারকিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান চলাকালে অনেক দোকানি দোকান বন্ধ করে পালিয়েছেন। ঘটনাস্থল রাজধানীর ভাটারার নতুন বাজার, সময় আজ রোববার দুপুর। এমনকি শাটার ফেলার সময় না পেয়ে দ্রুততার সঙ্গে ত্রিপল দিয়ে মুড়িয়ে দোকান বন্ধ করে আশপাশে অবস্থান নেন অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী। ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কয়েকটি দোকানে অভিযান চালিয়ে বাজার ত্যাগ করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বাজারের এক প্রান্তে অভিযান শেষ করে মাছ বাজারের পাশে ডিমের আড়তে আসতেই ডিম, আলু ব্যবসায়ী ও মুদিদোকানদারেরা ত্রিপল দিয়ে দোকান মুড়িয়ে আশপাশে অবস্থান নেন। বাজারের তিনটি গলিতে অর্ধশতাধিক দোকান বন্ধ করতে দেখা গেছে। অধিকাংশ দোকানদার ত্রিপল দিয়ে মুড়িয়ে সাময়িকভাবে দোকান বন্ধ করলেও অনেকে আগেভাগে পুরোপুরি শাটার লাগিয়ে দোকান বন্ধ করে দেন।

এ সময় বাজারে ক্রেতা এলে অনেক ব্যবসায়ী ক্রেতাদের বলেন, ‘এখন লাঞ্চ টাইম বা দুপুরের খাবারের সময়, এখন দোকান আর খোলা হবে না। পরে আসেন।’ অথচ এই অভিযান যখন চলছিল, তখন ঘড়িতে বাজে মাত্র দুপুর সাড়ে ১২টা। এই সময়ে সাধারণত বাজারের দোকানদারেরা দুপুরের খাবার খান না। তাঁরা আরও পরে দুপুরের খাবার গ্রহণ করেন বলে স্থানীয় ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রোজিনা সুলতানা ও মাগফুর রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাজারে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

বিক্রেতাদের দোকান বন্ধ করে চলে যাওয়ার বিষয়ে মাগফুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা যে শুধু জরিমানা করার জন্য আসি, তা নয়; আমরা বাজার পরিস্থিতি কীভাবে স্থিতিশীল করা যায়, তা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করি। কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা নিয়ে কথা বলি—সমাধানের পথ খুঁজি। অভিযান দেখে ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ করে চলে যাওয়ার অর্থ, তাঁরা সহযোগিতা করতে চাচ্ছেন না, তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেন না। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটির সঙ্গে কথা বলব।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যে দামে পণ্য পাইকারিতে কিনতে পারি, তার চেয়ে সামান্য বাড়িয়ে বিক্রি করি। কিন্তু পাইকারি বাজারে অভিযান না করে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। অভিযানে এসে কোনো না কোনো অজুহাতে জরিমানা করা হয়, কোনো কথাই তাঁরা শুনতে চান না। তাই অভিযান হচ্ছে বুঝতে পারলে সবাই দোকান বন্ধ রাখি। এই সময় ব্যবসা করতে গেলে যে টাকা লাভ হয়, একবার জরিমানা দিতে হলে তার কয়েকগুণ টাকা চলে যায়।’

তবে বাজারের সব দোকান বন্ধ হয়নি৷ কিছু বিক্রেতা দোকান খোলা রাখেন, যদিও তাঁদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ দেখা গেছে। অনেকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও আগ্রহ দেখাননি। এর মধ্যে মরিয়ম জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযানের সময় অনেকে ঝামেলা এড়াতে দোকান বন্ধ করে চলে যান।’

নতুন বাজারে বেলা একটার দিকে অভিযান শেষে ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ভাটারা নতুন বাজারে মোট ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনোটি পাকা রসিদ সংরক্ষণ করেনি, কোনোটি পণ্যের দাম বেশি রেখেছে। আবার কারও মূল্যতালিকায় ত্রুটি ছিল। সরকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজারে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *