প্রয়োজনে ইউরোপের সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন করার হুমকি এরদোয়ানের
তুরস্ক প্রয়োজনে ইউরোপের সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন করতে পারে বলে জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক প্রতিবেদনে তুরস্ক প্রসঙ্গে কিছু বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে এ কথা বলেন তিনি।
এই সপ্তাহের শুরুতে গৃহীত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে’ ২৭ সদস্যের এই জোটে তুরস্কের যোগদান প্রক্রিয়া ফের শুরু হতে পারে না। আঙ্কারার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘একটি সমান্তরাল ও বাস্তবসম্মত কাঠামো’ অনুসন্ধানের জন্য ইইউ’র প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের জন্য তুরস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে প্রায় ২৪ বছর আগে। তবে দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আইনের শাসনের বিষয়ে ইইউর উদ্বেগের কারণে আজও আটকে রয়েছে সেই প্রক্রিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এরদোয়ান বলেন, ইইউ তুরস্কের কাছ থেকে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এসব বিষয় আমরা মূল্যায়ন করবো এবং প্রয়োজনে ইইউ থেকে আলাদাও হতে পারি।
এর আগে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছিল, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিবেদনে ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ ও কুসংস্কার’ রয়েছে। এতে দেশটির সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের বিষয়ে ‘অগভীর ও অদূরদর্শী’ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে।
এর কিছুদিন আগেই অবশ্য এরদোয়ান শর্ত দিয়েছিলেন, সুইডেনকে ন্যাটোতে নিতে হলে তুরস্ককে ইইউতে নিতে হবে।
গত জুলাইয়ে লিথুয়ানিয়ায় ন্যাটো সম্মেলনের জন্য দেশ ছাড়ার আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, তিনি সুইডেনের ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করবেন, যদি আঙ্কারাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের সুযোগ দেওয়া হয়।
এরদোয়ান বলেন, ন্যাটোর প্রায় সব দেশই ইইউয়ের সদস্য। আর তুরস্কের ইইউ সদস্য পদে যে নেতারা বাধা দিয়েছিলেন, তারাই চাচ্ছেন আঙ্কারা যেন সুইডেনের ন্যাটো প্রার্থিতায় সমর্থন দেয়। কিন্তু আমি বাস্তবতার ওপর জোর দিতে চাই। তুরস্ক ৫০ বছর ধরে ইইউতে যোগদানের জন্য অপেক্ষা করছে।
১৯৮৭ সালে তুরস্ক প্রথম ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল, যা ইইউয়ের পূর্বসূরী। দেশটি ১৯৯৯ সালে ইইউয়ের প্রার্থী দেশ হয় ও ২০০৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটের সঙ্গে সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু করে। কিন্তু তুরস্কের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ইউরোপীয় উদ্বেগের কারণে ২০১৬ সালে সে আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়।
সূত্র: রয়টার্স