জবি শিক্ষার্থী না হয়েও জবি আইন বিভাগের সম্পাদক ইউনুস
তৌকির আহমেদ, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুস মাতাব্বর। শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসা-যাওয়া করলেও আদতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই নন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইন বিভাগের চলমান ব্যাচগুলোতে ইউনুস মাতাব্বর নামে কোনো শিক্ষার্থী নেই। বিভাগের নথিপত্রে এ নামের কোনো শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তার বিষয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিবের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শুরুর দিকে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে তাকে দু’একদিন দেখেছিলাম। এরপর থেকে কখনো কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখিনি। কিন্তু সে আইন বিভাগের পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস বলেন, আমার বিভাগের পরিচয় দিয়ে যদি কেউ কোনো কমিটিতে পদ নিয়ে থাকে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকে, সেটা তো ভেরিফাই করে নিতে হবে। যেহেতু তারা ভেরিফাই করে নেয়নি, তাহলে সেটা তো আমার ব্যর্থতা নয়, ওটা যারা পদ দিয়েছে তাদের ব্যর্থতা। আর সে যেহেতু আমার বিভাগের শিক্ষার্থী নয়, এ দায়ভার আমার নেওয়ার তো কারণই আসে না।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, ইউনুস যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী না কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করবে, সেটা কখনোই হতে পারে না।
আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান বলেন, ইউনুস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিয়ে আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করে। কিন্তু সে যে এত বড় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে, সেটা আসলে আমাদের জন্য খুবই লজ্জার।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, আমরা বিভাগের কমিটি দিয়েছি সিভি অনুযায়ী, তাতে সে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী উল্লেখ করেছে। সে অনুযায়ী আমরা কমিটি দিয়েছি। এখন যদি সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কারো তো ছাত্রলীগে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে ইউনুস মাতাব্বরের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।