ডেঙ্গুতে আরও ১০ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৭৪৮
এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে দেশে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১৬ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৭৪৮ জন। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৫ জনে। গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০ হাজার ১৯৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৪ হাজার ৪১১ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫ হাজার ৭৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকায় ৬৬ হাজার ৬৫ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৯ হাজার ২৭০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ৪২১ জন। ঢাকায় ৬১ হাজার ১৪১ এবং ঢাকার বাইরে ৭৩ হাজার ২৮০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু রোগী
৮ হাজার ১৪১ : মৃত্যু ৩০
খুলনা ব্যুরো : খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছাড়াল ৮ হাজার ৯১৪১ জন। এসময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ হাজার ২৩৬ জন। ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে মোট ৩০ জনের। মারা যাওয়ার মধ্যে খুমেক হাসপাতালে ১০ জন, খুলনায় ২ জন, সাতক্ষীরায় ১ জন, যশোরে ৬ জন, মাগুরায় ১ জন, কুষ্টিয়ায় ৪ জন, ঝিনাইদহে ২ জন এবং সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়। বর্তমানে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৭৭৩ জন এবং রেফার্ড করা হয় ১০২ জনকে।
গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা বিভাগের ৮ জেলায় ও দুটি সরকারি মেডিকেল কলেজ মিলে নতুন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ১৮১ জন এবং মৃত্যু হয় ৩ জনের। এর মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নাছিমা নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। তার বয়স ৪০। সে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বাসিন্দা সুজাত হোসেনের স্ত্রী। গত একদিনে খুমেক হাসপাতালে ২৫ জন এবং সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এছাড়া কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে একজন করে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র মতে, গত একদিনে খুলনা বিভাগের ৮ জেলায় নতুন করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ১৮১ জন। এ সময়ে খুমেক হাসপাতাল, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে একজন করে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়। গত একদিনে ৮ জেলায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির মধ্যে খুলনায় ১৪ জন, সাতক্ষীরায় ৭ জন, যশোরে ৪০ জন, ঝিনাইদহে ৩ জন, মাগুরায় ২৬ জন, নড়াইলে ২৮ জন, কুষ্টিয়ায় ১৮ জন এবং মেহেপুরে ১৮ জন ডেঙ্গু রোগী রয়েছে।
খুমেক হাসপাতালের আরএমও ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় খুমেক হাসপাতালে নতুন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৩ জন। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছে ১০১ জন। এ পর্যন্ত খুমেক হাসপাতালে ১০১৭ জনকে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন ৯০৭ জন এবং ৯ জনের মৃত্যু হয়।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র মতে, গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা জেলায় ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৮ জন। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৩৩ জন। এ পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৬৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩২৯ জন এবং রেফার্ড করা হয় ৫ জনকে এবং মৃত্যু হয় একজন রোগীর। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে রোগী ভর্তি হয়েছে ২৫ জন। এ সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাছিমা নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। সে যশোর কেশবপুর উপজেলার বাসিন্দা সুজাত হোসেনের স্ত্রী। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৬ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে ১২৩ জন। এ পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয় ১ হাজার ৭৬ জন। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৪৩ জন। মৃত্যু হয় ১০ জনের।
খুলনা সিভিল সার্জস অফিস সূত্র মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে খুলনায় ১৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ জন। এ পর্যন্ত খুলনায় ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয় ৩৯৮ জন এবং মৃত্যু হয় ২ জনের। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৫১ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৪০ জন এবং রেফার্ড করা হয় ৫ জনকে।