Home সারাদেশ কয়রায় ৭১ রকম চা বানাতে পারেন ছোটন
Ogos ২৯, ২০২৩

কয়রায় ৭১ রকম চা বানাতে পারেন ছোটন

মোঃ বায়জিদ হোসেন, কয়রা বিশেষ প্রতিনিধি :
চা বাঙালীর জনপ্রিয় পানীয়।কম বেশি সবাই চা খেতে ভালবাসে।এর মধ্যে রং চা ও দুধ চা মানুষ বেশিই খেয়ে থাকে। স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিরা পান করেন সবুজ চা। কিন্তু স্বাদ ও গন্ধে ৭১ প্রকারের চায়ের কথা কেউ শুনেছেন? আপনি শুনে না থাকলেও ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ আর গন্ধের ৭১ প্রকারের চা পান করছেন কয়রা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের হাজারও মানুষ।
কয়রা উপজেলার সদর বাজারে  একটি টিনের চালার দোকানে বসে ৭১  রকমের চা তৈরি করেন স্থানীয় যুবক আবু জাফর মোহাম্মদ ছোটন।চা-কে অনন্য এক শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তিনি।
সন্ধ্যা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত চলে তাঁর চায়ের পসরা। আর সেই চা পান করতে প্রতিদিন কয়রার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ছুটে আসেন তাদের বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে।
প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত এই চায়ের দোকান খোলা থাকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে চা পান করতে আসেন অসংখ্য মানুষ। তবে দিনের চেয়ে সন্ধ্যায় এখানে চা বিক্রি হয় বেশি।
চায়ের দাম ৫ থেকে ২০  টাকার মধ্যে। এর মধ্যে ১০ টাকার চা-ই বেশি। ২০ টাকা দামের চায়ের নাম ‘ছোটন স্পেশাল মধু চা’। কী আছে এতে জানতে চাইলে আবু জাফর মোহাম্মদ ছোটন  বলেন, মধু তো আছেই সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ রকমের মসলা ও সুন্দরবনের খাঁটি মধু দিয়ে বানানো হয়।
চায়ের দোকানে  রং চা, জিরা চা, কমলা চা, মালটা চা, তেতুল চা, চকলেট চা, লেমন চা, কাঁচা আমের চা, কামরাংগার চা, আদার চা, পায়েস চা, আঙ্গুর চা, মাসলা চা, আচার চা, বড়ই চা, কালো জিরা চা, জামের চা পাওয়া যায়, টক-ঝাল চা, বাদামের চা, ঝাল কফি, জলপাই চা, বুলেট চা, দুধ কলা চা, আদার লেমন চা, সুরিষা চা, গাজরের চা, বিস্কুট চা,  ঝাল চা, নারকেলি চা,তেতুল চা,তুলসি চা এবং সুন্দরবনের মধু চা।
ঈমান সুপার মার্কেটের দোকানদার মো.রিয়াছাদ আলী বলেন,ছোটন ভাই খুব ভাল চা বানায়।কয়েক মাস যাবত  সে হরেক রকম বাহারী চা বানানো শুরু করেছে। দিন দিন সে নিজ উদ্যোগে ৭১ রকমের রকমারি চা তৈরী করছে। এ চায়ের জন্য আজ আমাদের মার্কেটে  অনেক মানুষ আসে।
কয়রা সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো.গোলাম মোস্তফা বলেন,তার হাতের চায়ের জাদু আছে।তাই সময় পেলেই চা খেতে চলে আসি।
এখানের চা গুণেমানে অনেক ভাল হয়। তাই বন্ধু-বান্ধব নিয়ে চা খেতে আসি।
কয়রা ব্র্যাকের এরিয়া ম্যানেজার মো.মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,ছোটন ভাইয়ের মধু চায়ের আইটেমটি দারুণ।আমি সময় পেলেই মধু চা খেতে চলে আসি।মধু চাতে অনেক উপকার তাই এই চা খাওয়ার পরামর্শ অন্যান্যদেরও দিয়ে থাকি।
চা বিক্রেতা আবু জাফর মোহাম্মাদ ছোটন  বলেন, আমি গত ২০ বছর শুধু দুধ চা আর অল্প করে রং চা বিক্রি করেছি। কিন্তু একদিন এক গ্রাহক এসে বলছে তাকে ঠাণ্ডা কাশির চা দেয়ার জন্য। মজা করে হয়তো বলেছে ভেবেছিলাম কিন্তু আমিও আদা দিয়ে ভাল করে তাকে চা বানিয়ে খাওয়ালাম।
পরবর্তীতে শুনেছি তার উপকার হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমি আজ দুই বছর যাবত নিয়মিত ঔষধি ভেষজ আধা, কালোজিরা, রসুন, মধু ও বিভিন্ন ফলফলাদি দিয়ে হরেক রকম চা বানাচ্ছি এবং এতে মানুষ জনের ভাল সাড়া পাচ্ছি। সকল চায়ের মধ্যে তেতুল চা, আদার চায়ের বেশি চাহিদা।
তারা জানান, ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ আর গন্ধের এই অন্যরকম চা তাদের খুব ভালো লাগে। একেক দিন তারা একেক স্বাদের চা পান করেন। কেউ কেউ একই দিন একাধিক স্বাদের চা পান করে থাকেন।
কয়রা বাজার কমিটির সভাপতি সরদার জুলফিকার জানান,ছোটন ভাইয়ের হাতের চা সত্যিই অসাধারণ।সে ভাল চা বানায়।তাঁর চা খেতে অনেকে দোকানে আসে বলে শুনেছি।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *