রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে সৌদি আরব
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, তাস, বিবিসি: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ থামাতে কাজ করছে আফ্রিকা ও চীন। এবার এ কাজে যুক্ত হচ্ছে সৌদি আরব। আগামী মাসে ইউক্রেনের সঙ্গে বসতে যাচ্ছে সৌদি। এ আলোচনায় পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোসহ ভারত-ব্রাজিলকেও আমন্ত্রণ জানাবে সৌদি আরব।
৩০ দেশের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে- ইন্দোনেশিয়া, মিশর, মেক্সিকো, চিলি এবং জাম্বিয়া। আগস্টের ৫ অথবা ৬ তারিখে জেদ্দায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ইউক্রেন এবং পশ্চিমা বিশ্ব আশা করছে এ বৈঠকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি ফিরে আসবে। যদিও এ বৈঠকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেনের সঙ্গে তখনই শান্তি আলোচনা সম্ভব যদি তারা নতুন বাস্তবতা মেনে নেয়। তবে কিয়েভ বলছে রাশিয়া তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নিলে শান্তি আলোচনা সম্ভব।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদেরকে আহ্বান জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে কারা এতে অংশ নিবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও জুনে কোপেনহেগেনে এ ধরনের একটি আলোচনা হয়। তারপরও বিশ্ব নেতারা পুনরায় আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে।
শান্তি আলোচনার সময় শেষ হয়ে যায়নি : ইউক্রেন ইস্যুতে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে না রাশিয়া। আফ্রিকার শান্তি উদ্যোগের পাশাপাশি চীনের প্রস্তাবও ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। সেন্ট পিটার্সবার্গে আফ্রিকার নেতাদের সঙ্গে আলাপের পর সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত শনিবার পুতিন বলেন, তবে শান্তি আলোচনা বা যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করাটা কঠিন। কারণ ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী হামলা অব্যাহত রেখেছে।
যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রথমদিকে কয়েকবার দুই দেশের শীর্ষপর্যায়ের প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসলেও সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। এ অবস্থায় মস্কো ও কিয়েভ বলছে, নতুন করে আলোচনার টেবিলে বসতে হলে কিছু শর্ত মানতেই হবে। যুদ্ধ থামাতে করণীয় নিয়ে এর আগে চীনও ১২ দফা শান্তি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। কিন্তু ওই প্রস্তাবকে একতরফা উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করে ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেনের দাবি, ১৯৯১ সালে তার সীমানা যেমন ছিল সেটাই পুনঃস্থাপিত হোক। কিন্তু এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে ক্রেমলিন বলছে, শান্তি আলোচনার জন্য নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা মানতে হবে কিয়েভকে। এই বাস্তবতায় শনিবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, ইউক্রেনের ফ্রন্টে আপাতত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই তার। কিন্তু চলতি মাসের শুরুর দিকে ক্রিমিয়া সেতুতে হামলা হয়েছে। জবাবে প্রতিরোধমূলক আক্রমণ চালানো হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর কার্চ প্রণালীর ওপর নির্মিত ক্রিমিয়া সেতুতে একাধিক শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এসব ঘটনায় পুতিন সরাসরি কিয়েভকে দায়ী করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি জেলেনস্কির প্রশাসন।
তবে দেশটির সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়া সেতুতে এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটবে। কারণ এই পথ ব্যবহার করে ইউক্রেনে থাকা রুশ বাহিনীর কাছে সামরিক রসদ পৌঁছে দিচ্ছে মস্কো। ফল যেকোনও মূল্যে এটিকে ধ্বংস করা অনিবার্য।