সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বার্তা দিল বিএনপি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কর্তৃপক্ষের বেআইনি আদেশে বা চাপে পড়ে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এত দিন অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনি কাজ করেছেন, তাঁরা এখন থেকে যদি আর এ ধরনের অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনি কাজ না করেন, তাহলে তাঁদের আগের ভূমিকা “সহানুভূতি” ও “ইতিবাচক” দৃষ্টিতে বিবেচনা করা হবে।’
মঙ্গলবার রাতে বিএনপির মহাসচিব এমন আশ্বাস দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের অতি নগণ্যসংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ ও দলবাজ কর্মকর্তা অপপ্রচার চালাচ্ছেন যে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী শাসনামলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, এমনকি জেল-জরিমানার মতো পরিস্থিতির শিকার হতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর একাধিক বক্তব্যে এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। দলের পক্ষ থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে জনগণের সমর্থনে যদি বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়, তাহলে প্রজাতন্ত্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দলীয় বিবেচনায় কিংবা আক্রোশমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বা কাউকেই তা করতে দেওয়া হবে না। উপরন্তু বিগত ১৫ বছর যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান, দীর্ঘদিন ওএসডি রাখা এবং পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে, তাঁদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।’
বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যেসব কর্তৃপক্ষের বেআইনি আদেশে, কিংবা চাপে পড়ে বিতর্কিত কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন, যা প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী পরবর্তীতে অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনি বলে পরিগণিত হবে, সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর উদ্দেশে বিএনপির আহ্বান হলো—এখন থেকে তাঁরা যদি আর এরূপ অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনি কোনো কাজ না করেন, তাহলে তাঁদের আগের ভূমিকা সহানুভূতি ও ইতিবাচক দৃষ্টিতে বিবেচনা করা হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭৯ সালের সরকারি বিধি অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কেবল আইনানুগ আদেশ ও নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য। কিন্তু বেআইনি আদেশ মানা বা বাস্তবায়নে বাধ্য নন। এ দেশের সন্তান হিসেবেও দেশে আইনের শাসন সমুন্নত রাখা আমাদের সবার কর্তব্য। বিএনপি একান্তভাবেই প্রত্যাশা করে যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ না করে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে সততা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দেশ ও জনগণের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করবেন।’