কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগ
গাজীপুরে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে রুনা লায়লা (৩৮) নামে এক আইনজীবী হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই আব্দুল করিম বাদী হয়ে রোববার সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
নির্যাতনের স্বীকার রুনা লায়লা গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার কড়িহাতা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে এবং মৃত একেএম মাহমুদুল হকের স্ত্রী। তিনি ঢাকার কোতোয়ালি থানার ৭৩৫নং মামলায় গত ১৫ জুন বিচারাধীন অবস্থায় ১৬ জুন থেকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার- ৩-এ রয়েছেন।
আব্দুল করিম বলেন, গত ১৮ জুন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমার বোনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করি। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় পুনরায় আমার বোনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে গেলে নাম-ঠিকানা নেওয়ার তিন ঘণ্টা পর সাক্ষাতের টিকিট কাউন্টার থেকে আমাকে জানানো হয় ডিও নাই, দেখা করা যাবে না। তারপরও আমি সেখানে অপেক্ষা করতে থাকি। পরে জামিনে বের হয়ে আসা লোকদের কাছে আমার বোন সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা আমাকে জানান আমার বোন রুনা লায়লাকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। তখন আমি উদ্বিগ্ন হয়ে ফিরে যাই এবং পরের দিন আমরা আবার কারাগারে আমার বোনের সঙ্গে দেখা করতে যাই। কৌশলে জানতে পারি আমার বোনের কাছে ৭ হাজার ৭০০ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সেই টাকা কেড়ে নেওয়ার জন্য কারাগারে দায়িত্বে থাকা হাবিলদার ফাতেমা ও নাসিমা এবং হাজতি/কয়েদি শামীমা নুর পাপিয়া, সোনালী, আনন্দিকা, অবন্তিকা ও নাজমা আমার বোনকে (সিসি ক্যামেরা নেই এমন স্থানে নিয়ে) বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। পরে আমার বোনকে আরও বেশ কয়েকবার পেটানো হয় বলেও আমরা জানতে পেরেছি।
জেল সুপার ফারহানা আক্তার বলেন, রুনা লায়লা কারাগারে আসার পর দিন তার কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পাওয়া যায়। টাকার বিষয় জানতে তাকে মাইকে বেশ কয়েকবার ডাকা হয়। যার কারণে সে হাবিলদারের ওপর রাগান্বিত হন। পরে অন্য কয়েদিরা এসে তাকে মারধর করেন। এ ঘটনার সময় শামীমা নুর পাপিয়া ওই খানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ ঘটনায় প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়।
তবে কারাগারের ভেতরে এমন ঘটনা দুঃখজনক বলে জানান তিনি।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, রুনা লায়লাকে যারা চড়-থাপ্পড় মেরেছিল তাদের কারাবিধি অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। জেল সুপার ফারহানা আক্তারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক মো. আনিসুর রহমান জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।