Home অপরাধ সেন্ট্রাল হাসপাতালের সেই প্রসূতির মৃত্যু
জুন ২৬, ২০২৩

সেন্ট্রাল হাসপাতালের সেই প্রসূতির মৃত্যু

রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ নবজাতকের মৃত্যুর পর প্রসূতি মাহবুবা রহমান আঁখিও মারা গেছেন। রবিবার (১৮ জুন) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

এর আগে গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে প্রসব ব্যথা ওঠায় মাহবুবা রহমান আঁখিকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে ভর্তি করানো হয়। পরে গত ১৪ জুন (বুধবার) সেন্ট্রাল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসা’ ও কর্তৃপক্ষের ‘প্রতারণা’র অভিযোগ তোলেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী। তিনি দাবি করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মারা গেছে তাদের নবজাতক সন্তানও।

  • সেন্ট্রাল হাসপাতালে সব অস্ত্রোপচার বন্ধ
  • নবজাতকের মৃত্যু: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ২ চিকিৎসকের স্বীকারোক্তি

ঘটনার পর পার্শ্ববর্তী ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। তার মৃত্যুর তথ্য বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন ল্যাবএইড হাসপাতালের কমিউনিকেশন ম্যানেজার চৌধুরী মেহের ই খুদা। তিনি জানান, আজ দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে তিনি মারা যান।

আঁখির ভাই শামীম বলেন, ‘সব প্রক্রিয়া শেষ করে মরদেহ নিয়ে আমরা কুমিল্লা নিয়ে যাবো। সেখানে তাকে দাফন করা হবে।’

জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এসময় তার শারীরিক অবস্থা ‘স্বাভাবিক’ ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্তও করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।

প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হয়। ওইসময় ডা. সংযুক্তা সাহা দেশেই ছিলেন না, অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের জানায়, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। অন্য চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা ব্যর্থ হলে তখন অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করা হয়। পরদিন মারা যায় শিশুটি।

ওই ঘটনায় বুধবার ধানমন্ডি থানায় মোট ছয় জনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ থেকে ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে একটি মামলা করা হয়। সেখানে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা হলেন ডা. মিলি, ডা. এহসান, অধ্যাপক সংযুক্তা সাহার সহকারী জমির এবং হাসপাতালের ব্যবস্থাপক পারভেজ।

মামলাটিতে গ্রেফতার দুই চিকিৎসক ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা এরই মধ্যে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারহা দিবা ছন্দা আসামি মুনার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমি আসামি শাহজাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিকে চিকিৎসাজনিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি পরিদর্শন দল ওই হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শনে আইসিইউতে রোগীর রাখার উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়া যায়নি। এজন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষ বন্ধ করে দেওয়াসহ কয়েকদফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *