Home অপরাধ ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধী নারী, শালিসে মীমাংসার চেষ্টা
জুন ২২, ২০২৩

ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধী নারী, শালিসে মীমাংসার চেষ্টা

  • খন্দকার রবিউল ইসলাম মজনু, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি: রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নে এক বিস্কুট বিক্রেতার ধর্ষণে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক নারী (২৫) ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রিপন মণ্ডল (৩০)। তিনি আলীপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর মধ্যপাড়া গ্রামের গোলাপ মণ্ডলের ছেলে। পেশায় তিনি একজন বেকারির বিস্কুট বিক্রেতা। তার ১০ বছর বয়সি এক ছেলে ও ৪ বছর বয়সি এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী নারী স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারেননা। বুধবার (২১ জুন) দুপুরে তার বাড়িতে গেলে অস্পষ্ট কণ্ঠে তিনি জানান, ‘তার স্বামী মারা গেছেন আড়াই বছর আগে। এরপর থেকে তিনি ১১ বছর বয়সি ছেলেকে নিয়ে আলীপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর মধ্যপাড়া গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকেন। ৫ মাস আগে একদিন দুপুরে তিনি বাবার বাড়ির পাশে ভাইয়ের বাড়িতে যান। ওই বাড়ি যাতায়াতের রাস্তার সাথেই রিপনের বাড়ি। ভাইয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে রিপন তাকে ডাক দিয়ে বিস্কুট দেয়ার কথা বলে নিজের ঘরের মধ্যে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। সেসময় ওই বাড়িতে কেউ ছিলনা বলে দাবি করেন তিনি।’

ভুক্তভোগী নারীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ে স্থানীয় একটি জুট মিলে শ্রমিকের কাজ করে। গত রোজার কয়েকদিন আগে সে মিলে কাজ করার সময় মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এরপর থেকে সে মাঝেমধ্যে বমিও করত। যে কারণে তার জন্ডিস হয়েছে মনে করে স্থানীয় আলাদিপুর বাজারের এক পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে তাকে ওষুধ খাওয়ানো হয়। তবে এতেও তার বমি কমে না। কিছুদিন পর তার শারীরিক গঠন পরিবর্তন হলে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি টের পাওয়া যায়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানায়, রিপন তাকে ধর্ষণ করার কারণে তার এই অবস্থা হয়েছে। এরপর আমি বিষয়টি এলাকার মেম্বার রহিম সরদারকে জানাই। মেম্বার বিষয়টি শালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করার আশ্বাস দেন। গত শনিবার তারা শালিসে বসেছিল, কিন্তু রিপন শালিস মানেনি। যে কারণে শালিস হয়নি। আমি রিপনের বিচার চাই।’

আপনারা থানায় যাননি কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, তেমন কিছু বুঝিনা। মেম্বার যেভাবে বলেছে সেভাবেই করেছি।’

ইউপি সদস্য মো. রহিম সরদার বলেন, ‘আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখা গেছে প্রতিবন্ধী ওই নারী ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত শনিবার (১৭ জুন) রাতে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে শালিসে বসেছিলাম। শালিসে রিপন ওই নারীর সঙ্গে মেলামেশা করার কথা স্বীকার করেছে। তবে নারীর পেটের বাচ্চা তার নয় বলে দাবি করেছে। যে কারণে শালিসে কোন সমাধান হয়নি। পরে আমি ভুক্তভোগী নারীকে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য বলে দিয়েছি।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত রিপন মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করে নি। তবে তার স্ত্রী বলেন, ‘এলাকার লোকজন বলছে, আমার স্বামী প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ করেছে। তবে আমি এ কথা বিশ্বাস করিনা। আমার স্বামী এমন কাজ করতে পারেনা।’

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *