গ্যাসট্রিকের ব্যথায় ভোগা কিশোরীকে গর্ভবতীর ভুল রিপোর্ট: ক্লিনিক বন্ধ
নীলফামারীর ডোমারে জেনারেল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১৩ বছরের এক কিশোরীর গর্ভবর্তী হওয়ার ভুল রিপোর্ট দেওয়ার দায়ে ক্লিনিকটি সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই সাথে আদায় করা হয়েছে ২২ হাজার টাকা জরিমানা। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ রায় দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি।
জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকাকে জানান, অভিযোগ ও নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার অংশ হিসেবে ক্লিনিকটি সাময়িক বন্ধ ও ২২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তবে বেশ কিছু শর্ত ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। সেই শর্তগুলো পূরণের পর অনুমতি সাপেক্ষে পুনরায় তারা ক্লিনিকটি চালু করতে পারবে।
এর আগে ১২ জুন ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ১৩ বছরের এক কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ভুল প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগে ক্লিনিকটি অবরোধ করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর স্বজন ও স্থানীয়রা। একই সঙ্গে ওই ক্লিনিক বন্ধের দাবি জানান তারা। এ ছাড়া এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এ ঘটনায় ওই পত্রিকার অনলাইনে ‘গ্যাসট্রিকের ব্যথায় ভোগা কিশোরী গর্ভবতী জানিয়ে গর্ভপাত করতে চাপ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এদিকে এ ঘটনায় একটি তদন্তে কমিটি গঠন করেছেন ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. নাহিদা তাসনিম হিমিকে। আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। অন্য সদস্যরা হলেন, মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. কামরুল ইসলাম, স্যানিটারি পরিদর্শক আলামিন রহমান ও নার্সিং ইনচার্জ আকলিমা আক্তার।
দায়িত্ব পেয়ে বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে ডোমার জেনারেল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করেছেন চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত দল।
এ বিষয়ে ডা. নাহিদা তাসনিম হিমি জানান, আমরা তদন্ত করেছি। আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রায়হান বারী জানান, কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুন গ্যাস্ট্রিকের কারণে পেটের ব্যথা নিয়ে তের বছরের এক কিশোরী চিকিৎসার জন্য গিয়েছিল নীলফামারীর ডোমার উপজেলা শহরের বেসরকারি জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আলট্রাসনোগ্রাফি ও মূত্র পরীক্ষা করায় ওই কিশোরীর। এরপর রিপোর্ট দেয় কিশোরী গর্ভবতী। তবে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হলে তারা আরও দুটি ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করেন। সেখানে রিপোর্ট স্বাভাবিক আসে। এতে ক্ষোভে সোমবার ওই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবরোধ করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের দাবি জানান স্বজন ও স্থানীয়রা।