আটবারের চেষ্টায় কনস্টেবল থেকে সহকারী পুলিশ কমিশনার
দিল্লি পুলিশের কনস্টেবল রাম ভজন কুমারের স্বপ্ন ছিল সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসিপি) হওয়ার। এই স্বপ্ন পূরণে চাকরির পাশাপাশি শুরু করেন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া। সাতবার ব্যর্থ হওয়ার পর আটবারের চেষ্টায় ধরা দিয়েছে সেই স্বপ্ন। ভারতের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় এবার ৬৬৭তম হয়েছেন তিনি।
রাজস্থানের কৃষক পরিবারের সন্তান রাম ভজন কুমার বলেন, ‘সাতবার ব্যর্থ হওয়ার পরও কখনো আশা ছেড়ে দেইনি। আমার হারানোর কিছু ছিল না। রাজস্থানের গ্রাম থেকে আমি এসেছি, আমার বাবা দিনমজুর। আমি দেখেছি আমাদের পড়াশোনা করানোর জন্য এবং খাবার খাওয়ানোর জন্য আমার পরিবার কী সংগ্রামটা করত। আমরা কখনো আশা ছাড়তাম না। সে কারণে যখন আমি সিভিল সার্ভিসে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেলাম, তখন ভাবলাম এটার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
৩৪ বছর বয়সী রাম ভজন কুমার ২০০৯ সালে দিল্লি পুলিশে কনস্টেবল হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম যদি পরীক্ষায় পাস করতে না পারি, তাহলে আমার সন্তানদের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিতে অনুপ্রাণিত করব। তাদের মাধ্যমে আমার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখব।’
রাম ভজন কুমার সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বেশি সময় দেওয়ার জন্য মনে মনে ৮ ঘণ্টার শিফট চাইতেন। মাঝেমধ্যে নির্দিষ্ট ডিউটি স্লট পাওয়ার সৌভাগ্যও হয়েছিল। ডিউটির নির্দিষ্ট সময় শেষ করে সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতি নিতেন।
কুমার আরও বলেন, তিনি প্রতিদিন কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন। পরীক্ষার তারিখ কাছাকাছি এলে এক মাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করতেন এবং প্রস্তুতির জন্য প্রতিদিন প্রায় ১৬ ঘণ্টা পড়তেন।
রাম ভজন কুমার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এক মাসের ছুটি পাওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু পরে যখন আমার সিনিয়ররা জানতে পারেন আমি ইউপিএসি পরীক্ষা নিয়ে সিরিয়াস এবং আগের পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়েছি, তাঁরা আমাকে অনুপ্রাণিত করতেন এবং ছুটি মঞ্জুর করতেন।’
এর আগে ২০১৯ সালে ফিরোজ আলম নামের একজন কনস্টেবল ভারতের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করে এসিপি হয়েছিলেন। ফিরোজ আলমের সফলতা দেখে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন রাম ভজন কুমার।
রাম ভজন কুমার বলেন, ‘আলম স্যার র্যাংক পাওয়ার পর, আমি কঠোর পরিশ্রম করার অনুপ্রেরণা পেয়েছি। তিনি আমার এবং অন্যান্য ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিলেন। সেই গ্রুপের মাধ্যমে আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করতেন।’