স্ত্রীর মর্যাদা পেতে যুবলীগ নেতার বাড়িতে নারীর অনশন
জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের মেলান্দহে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে যুবলীগ নেতার বাড়িতে অনশন করেছে এক নারী। সোমবার (১২ জুন) বেলা ১২টার দিকে হাজড়াবাড়ি পৌরসভার কড়ইচড়া এলাকায় যুবলীগ নেতা মুজিবুল হাসান শামীম হাজারীর বাড়িতে অনশন শুরু করে ওই নারী।
জানা যায়, মুজিবুল হাসান শামীম (৩৭) হাজারী হাজড়াবাড়ি পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি। অনশনে থাকা সুমনা বেগম (২৫) হাজড়াবাড়ি পৌরসভার ঢালুয়াবাড়ি গ্রামের সুজন শেখের কন্যা।
সুমনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, প্রায় একবছর আগে শামীম হাজারীর সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ঢাকায় নিয়ে মসজিদের ইমামের মাধ্যমে আমাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর জামালপুর পৌরসভার নতুন হাইস্কুল মোড়ে একটি ভাড়া বাসায় দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করি। মাঝেমধ্যে শামীম সেই ভাড়া বাসায় এসে আমার সাথে থাকতো। আমার এর আগে বিয়ে হয়েছিল। শামীম হাজারীর কথায় আমি ওই স্বামীকে তালাক দিয়ে চলে এসেছি। একপর্যায়ে কাবিন করার জন্য আমি তাকে চাপ প্রয়োগ করলে সে আমার সাথে একমাস যাবত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাকে না পেয়ে শামীম এর বাড়ীতে গিয়ে দেখি তার ঘর তালা বদ্ধ। আমার আসার খবর পেয়ে সে পালিয়ে যায়।
সুমনা আরও জানান, আমি ১২টার দিকে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে তাদের বাসায় আসলে তার চাচাতো বোন হ্যাপি ও সেতু এসে আমাকে তিনতলা থেকে মারধরও করে টেনে হিচড়ে বাসা থেকে বের করে দেয়। শামীম হাজারী যদি আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দেয় তাহলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন পথ থাকবেনা।
এ ব্যাপারে শামীম হাজারীর কাছে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মেয়ের আগে আরো দুইবার বিয়ে হয়েছিল। তার চাচাতো ভাই শেখ রানা আমার দোকান ঘর ভাড়া চেয়েছিল আমি দেয়নি। তাই আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যেই এসব রটাচ্ছে।
এ বিষয়ে হাজরাবাড়ী পৌর যুবলীগের সভাপতি রোহান শাহ রেজা জানান, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হয়েছি। শামীম হাজারী যেহেতু পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছে। যদি সে কোনো অনৈতিক কাজে জড়িত থাকে এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন বাঘা বলেন, যদি কেউ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের মত কোন অপরাধ করে থাকেন তা যদি প্রমাণিত হয় তাহলে দল অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে।
মেলান্দহ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।