সনদ পুড়িয়ে মুক্তি পেলেন মুক্তা, অন্যরা কী করবেন?
অনলাইন ডেস্ক নিউজ,
এ এক অন্য রকম সময়ে আমাদের বাস। মন খারাপ থাকলে পোস্ট দিতে হয় ফেসবুকে। মন ভালো কিংবা উচ্ছ্বসিত থাকলে সেটাও ফেসবুকে জানাতে হয়। এখানে নির্যাতন-নিপীড়নের বিচারও চাইতে হয়। সংকট সমাধানের আকুতিও জানাতে হয় ফেসবুকে। এই ফেসবুকের বিশাল বুক, তার বুকে সবাই আছড়ে পড়ে। ব্যাপারটা এমন—‘যার কেউ নেই, তার ফেসবুক আছে।’ এর মধ্যে যাঁর কপাল ভালো, তিনি ভাইরাল হন। কর্তৃপক্ষের নজরে পড়েন। তাঁর সংকটের সমাধান হয় কিংবা বিচারপ্রার্থীর বিচার মেলে। কিন্তু যাঁরা ভাইরাল হতে পারেন না, তাঁদের কষ্ট, ব্যথা, বেদনা, হাহাকার ও আর্তনাদ রয়ে যায় ফেসবুক নামক বিশাল সমুদ্রের এক কোণে।
রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর করা মুক্তা সুলতানার কপাল ভালো। তিনি ফেসবুক লাইভে স্নাতকের সনদপত্র পুড়িয়ে ভাইরাল হতে পেরেছেন। কর্তৃপক্ষের নজরে আসতে পেরেছেন। তাঁকে ডেকে নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের একটি প্রকল্পের সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার হিসেবে চাকরি দেওয়া হয়েছে। বেতন ৩৫ হাজার টাকা।
সনদ পুড়িয়ে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেলেন মুক্তা। কিন্তু অন্যরা কী করবেন? তাঁরাও কী সনদ পুড়িয়ে চাকরির আবেদন জানাবেন? এতে কাজ হবে? মনে হচ্ছে না, কারণ একই চমক আগের মতো গুরুত্ব পাবে না, ভাইরাল হবে না। কর্তৃপক্ষের নজরেও আসবে না, ফলে চাকরিও মিলবে না। অবশ্য কেউ যদি অভিনব চমক দেখিয়ে ভাইরাল হতে পারেন, সে ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা।
যাহোক, এ চাকরির মাধ্যমে মুক্তা সুলতানা হয়তো সাময়িক মুক্তি পেলেন। সাময়িক বলা হচ্ছে এ জন্য যে চাকরিটা প্রকল্পের, তাঁর নিয়োগ ছয় মাসের জন্য। এরপর তাঁর চাকরি থাকবে কি না, সেটা একটি বড় প্রশ্ন।
নির্ধারিত ৩০ বছরের মধ্যে সরকারি চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মেয়ে মুক্তা সুলতানা চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে স্নাতকের সনদের ফটোকপি পুড়িয়েছিলেন। তাঁর মতো তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশের একই দাবি। এ চাকরির মাধ্যমে একজন মুক্তার সমস্যা হয়তো সমাধান হলো। কিন্তু মূল সমস্যার কোনো সমাধান হলো না। বয়সসীমার যে পদ্ধতিগত ও কাঠামোগত সমস্যা, সেটা রয়েই গেল। সে বিষয়ে কিঞ্চিৎ নজর দিল না কর্তৃপক্ষ।