পারিবারিক আইন সংস্কার না করার দাবি হিন্দু মহাজোটের
‘কতিপয় এনজিও কর্তৃক হিন্দু আইন পরিবর্তনের প্রচেষ্টার’ অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। শুক্রবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিলে এ দাবি জানানো হয়। নেতারা বলেন, যারা হিন্দু আইনকে নষ্ট করতে চায় হিন্দু সমাজ তাদের কোনো ছাড় দেবে না। আগামী ৩০ মে’র মধ্যে এ বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণার দাবি জানান তারা।
তাদের অভিযোগ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, নারী পক্ষ, মহিলা পরিষদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি এনজিও হিন্দু পরিবার, সমাজ ও ধর্মবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে হিন্দু সমাজ ও পরিবারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তাদের নিবন্ধন বাতিল করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে সরকারকে আহ্বান জানান নেতারা।
বক্তারা বলেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি এনজিও হাজার বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে চলে আসা সুসংহত হিন্দু বিধি-বিধান নষ্ট করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও অশান্তির বীজ বপন করছে। তারা সুপ্রতিষ্ঠিত ও শান্তিপূর্ণ হিন্দু পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে হিন্দু শূন্য করার পরিকল্পনায় মাঠে নেমেছে।
বক্তারা বলেন, তথাকথিত সুশীল সমাজ ও এনজিওকর্মীরা হিন্দু আইনে তালাক ব্যবস্থা সংযুক্ত করার প্রস্তাব জমা দিয়েছে। তারা হিন্দু বিবাহের মূল ভিত্তি নষ্ট করতে তৎপর। এনজিওদের চাপাচাপির কারণে সরকার অপসোনাল বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু করেছে। সেই রেজিস্ট্রেশনও হচ্ছে মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রারে।
তারা বলেন, মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রারে রেজিস্ট্রি করা খুলনার শ্রীবাস সাহা আবার সেই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছেন। অর্থাৎ বাধ্যতামূলকভাবে হিন্দুদের ঘাড়ে মুসলিম বিধি বিধান চাপিয়ে দিচ্ছে। অতএব তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ যে নামেই হোক না কেন কোনোটাই হিন্দু সমাজ মেনে নেবে না।
বক্তারা বলেন, হিন্দু আইনের মূল ভিত্তি বেদ। বেদ ঈশ্বরের বাণী। হিন্দু বিবাহ, উত্তরাধিকারসহ সব বিধি-বিধান বেদ থেকে এসেছে। হিন্দু আইনে হস্তক্ষেপের অর্থ সরাসরি হিন্দু ধর্মের ওপর হস্তক্ষেপ; যা হিন্দু সমাজ কখনই মেনে নেবে না।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- নির্বাহী সভাপতি দীনবন্ধু রায়, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, প্রেসিডিয়াম মেম্বার অভয় কুমার রায়, যুগ্ম মহাসচিব পল্টন দাস, যুব বিষয়ক সম্পাদক কিশোর বর্মন, দপ্তর সম্পাদক কঙ্কন মৃধা, হিন্দু মহিলা মহাজোটের সভাপতি লাকী বাছাড়, নির্বাহী সভাপতি বহ্নি শিখা দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সমাপিকা দাস, প্রণব মঠের অধ্যক্ষ স্বামী সঙ্গীতানন্দ মহারাজ, হিন্দু স্বেচ্ছাসেবক নির্বাহী সভাপতি মিল্টন বিশ্বাস, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি গৌতম সরকার অপু, হিন্দু মহাজোট ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজিব কুন্ডু তপু, সাধারণ সম্পাদক রনি রাজবংশী, প্রকাশনা সম্পাদক বিধান সরকার অর্ঘ, নির্মল দাস প্রমুখ।