Home ধর্মীয় সংবাদ যেসব ফলের নাম কোরআনে এসেছে
Mei ২১, ২০২৩

যেসব ফলের নাম কোরআনে এসেছে

সম্পাদক,
পৃথিবীতে মানুষের নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ফলমূলের উপস্থিতি দেখা যায়। যদিও জাতি ও অঞ্চলভেদে মানুষের খাদ্যাভ্যাসের ভিন্নতা রয়েছে। পরকালেও মহান আল্লাহ জান্নাতবাসীদের বিভিন্ন ফলের মাধ্যমে মেহমানদারির ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তথায় তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর ফলমূল, তা থেকে তোমরা আহার করবে।’ (সুরা : জুখরুফ, আয়াত : ৭৩)। অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘সেখানে তাদের জন্য থাকবে ফলমূল এবং যা চাইবে (তা-ই পাবে)’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৫৭)। তিনি আরো বলেন, ‘তাদের জন্য রয়েছে নির্ধারিত রিজিক। ফলমূল এবং তারা সম্মানিত। (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ৪১-৪৩)

তাই ফল ইহকালীন ও পরকালীন খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। নিচে কোরআনে বর্ণিত ফলগুলোর উপকারিতা বর্ণনা করা হলো—

#খেজুর : খেজুর কোরআনে বর্ণিত ফলগুলোর অন্যতম। এটি খুবই পুষ্টিকর একটি ফল। খেজুরকে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলা হয়। সুরা মারিয়ামের ২৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা মরিয়াম (আ.)-কে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আর তুমি নিজের দিকে খেজুরগাছের কাণ্ড নাড়া দাও। তা থেকে তোমার ওপর সুপক্ব খেজুর পতিত হবে। খেজুরের রয়েছে বহুমুখী উপকারিতা।’ যেমন—
১. খেজুর মানসিক চাপ কমায়।
২. খাদ্যে অরুচি দূর করে।
৩. কফ, সর্দি-কাশি উপশম করে।
৪. বদ-হজম দূরীভূত করে।
৫. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
৬. তারুণ্য ও যৌবন ধরে রাখে।
সাধারণত মরু এলাকায় খেজুর বেশি জন্মে। পূর্ব ও উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে খেজুর চাষের প্রচলন বেশি। বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে খেজুর চাষ করা হয় রস ও গুড়ের কাজে। দেশীয় খেজুর তেমন উন্নত মানের নয়।

#ডালিম_বা_আনারঃ : ডালিম বাংলাদেশে পরিচিত একটি ফল। এটি আনার নামেও পরিচিত। কোরআনে ডালিমের বর্ণনাও এসেছে। সুরা আর-রহমানের ৬৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তথায় রয়েছে ফলমূল, খেজুর ও আনার।’ অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘…খেজুরের কাঁদি থেকে গুচ্ছ বের করি, যা নুয়ে থাকে। এবং আঙুরের বাগান, জয়তুন ও আনার। সাদৃশ্যপূর্ণ ও সাদৃশ্যহীন…।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৯৯)

ডালিমের অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন—
১. হৃদেরাগের ঝুঁকি কমায়।
২. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৩. ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে।
৪. ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
৫. হজমে সহায়তা করে।
৬. নারীদের ডেলিভারি সহজ করে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে ডালিম জন্মে। উত্তর গোলার্ধে এটি সেপ্টেম্বর-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জন্মে। দক্ষিণ গোলার্ধে মার্চ-মে পর্যন্ত জন্মে।

#আঙুর : আঙুর সবার কাছে পরিচিত একটি ফল। এটিকে অভিজাত ফল হিসেবে গণ্য করা হয়। অন্যান্য ফলের চেয়ে দামও একটু বেশি। সুরা আবাসার ২৭ ও ২৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর আমি উৎপন্ন করি শস্য, আঙুর ও শাকসবজি।’ অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তার মাধ্যমে তোমাদের জন্য উৎপন্ন করেন ফসল, জয়তুন, খেজুরগাছ, আঙুর এবং ফলফলাদি। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে এমন জাতির জন্য, যারা চিন্তা করে।’ (সুরা : নাহাল, আয়াত : ১১)

আঙুরের উপকারিতা হলো—
১. ক্যান্সার নিরাময় করে।
২. ত্বক সুরক্ষিত করে।
৩. কিডনি ভালো রাখে।
৪. নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনে সহযোগিতা করে।
৫. বদহজম দূর করে।
৬. অ্যাজমা প্রতিরোধ করে।
৭. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আঙুর চাষ হয়। বর্তমানে বাংলাদেশেও আঙুর চাষ হচ্ছে। আঙুরের বিভিন্ন রং রয়েছে। কালো, নীল, সবুজ, বেগুনি, লাল-সাদা ইত্যাদি।

#ডুমুর : ডুমুর একধরনের নরম ও মিষ্টিজাতীয় ফল। এটি আঞ্জির নামে বেশি পরিচিত। ডুমুর ফল হিসেবে অনন্য। কোরআনে ডুমুরের নামে বিশেষ একটি সুরা আছে। যাকে ‘সুরা তিন’ বলা হয়। আবার সুরা তিনের শুরুতেই মহান আল্লাহ ডুমুরের নামে শপথ করেছেন। তিনি বলেন, ‘শপথ ডুমুর ও জয়তুনের।’ (সুরা : তিন, আয়াত : ১)

ডুমুরের উপকারিতা হলো :
১. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. হাড় বৃদ্ধিতে সহায়ক।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৫. ত্বকের জন্য উপকারী।
এটি সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যে পাওয়া যায়। মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে। তবে বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের ডুমুরে পার্থক্য আছে।

#কলা : কলা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ও পরিচিত ফল। এটা সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। সুরা ওয়াকিয়ার ২৭-২৯ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা ডান দিকে থাকবে, তারা কত ভাগ্যবান। তারা থাকবে কাঁটাবিহীন কুল বৃক্ষে। এবং কাঁদি কাঁদি কলায়।

কলার অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন—
১. শরীরে শক্তি জোগায়।
২. খাদ্য হজমে সহায়তা করে।
৩. পাকস্থলীর আলসার দূর করে।
৪. বুকজ্বালা রোধ করে।
৫. মানসিক চাপ কমায়।
সাধারণত উষ্ণ জলবায়ু সম্পন্ন দেশগুলোয় কলা ভালো জন্মে।

Tinggalkan Balasan

Alamat e-mel anda tidak akan disiarkan. Medan diperlukan ditanda dengan *