ঢাকায় ডাকাতি ও শিশু অপহরণ ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য র্যাবের
শুক্রবার দিনদুপুরে রাজধানীর আজিমপুরে মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারে একটি বাসায় ডাকাতি হয়েছে। লুটপাটের পর ডাকাতরা গৃহকর্ত্রীর দুধের শিশুকেও অপহরণ করে নিয়ে যায়।পরে শুক্রবার মধ্যরাতে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিং এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় মূল অপহরণকারী ফাতেমা আক্তার শাপলাকে (২৭) গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতার শাপলাকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে র্যাব।এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহে শিশুটির বাবাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতে।
রাজধানীর আজিমপুরে ডাকাতির সময় মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে ৮ মাস বয়সি শিশু আরিসা জান্নাত জাইফাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
সংবাদ সম্মেলনে মুনীম ফেরদৌস বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে শিশু জাইফাকে উদ্ধারের সময় মূল অপহরণকারী ফাতেমা আক্তার শাপলাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল। আজিমপুরে বাসায় ডাকাতি ও শিশু অপহরণের ঘটনায় শাপলার সঙ্গে সুমন, রায়হান ও হাসান নামে আরও তিন সহযোগী ছিল। তাদের টার্গেট ছিল শিশু জাইফার বিনিময়ে তার মার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করা। তবে ঘটনার পর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হলে তারা আত্মগোপনে থাকে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানান, শিশুটির মা ফারজানা আক্তার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কর্মরত। বাবা আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের ল্যাব সহকারী। প্রতারক শাপলা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে শিশুটির মা ফারজানাকে টার্গেট করে। তিনি বাসে করে অফিসে যাতায়াতকালে শাপলা নানা কৌশলে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে শাপলা অসহায়ত্বের কথা বলে শিশুর মায়ের সঙ্গে সাবলেটে একই বাড়িতে থাকার পরিকল্পনাও করেন। এক সপ্তাহ আগে ফারজানার বাসায় আসেন শাপলা। পরে ১৪ নভেম্বর রাতে আজিমপুরে ফারজানার বাড়িতে একটি রুম সাবলেটে ভাড়ায় ওঠেন। ওইদিন রাতে কৌশলে ভুক্তভোগীকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। পরদিন (শুক্রবার) সকালে শাপলার আরও তিনজন সহযোগী ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে থাকা নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, প্রায় সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়। এরপর শিশুটিকে অপহরণ করে নবীনগর হাউজিং এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
শিশু অপহরণের ঘটনায় তার বাবা আবু জাফরকে র্যাব নজরদারিতে রেখেছে বলে জানান মুনীম।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানান, শিশুর বাবা-মার মধ্যে সাংসারিক মনোমালিন্য ছিল। তাই তারা আলাদা থাকতেন। তবে শিশুর বাবার আজিমপুরে বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল।দিনে শিশুর সঙ্গে থেকে রাতে তিনি অন্যত্র চলে যেতেন। এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অপহরণকারী শাপলার গ্রামের বাড়ি বগুড়া।তিনি মা-বোনের সঙ্গে আদাবর নবীনগর হাউজিংয়ে থাকতেন।