ভিডিও ফাঁস: দেশে ফিরেই অ্যাকশন নেবেন তানজিন তিশা! কার বিরুদ্ধে?
অনলাইন ডেস্ক নিউজ,
সম্প্রতি ফাঁস হয় তিন অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল, তানজিন তিশা, নাজিফা তুষি এবং অভিনেতা শরীফুল রাজের ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও। ‘পরাণ’-এর ‘ব্যাড বয়’ রোমান তথা রাজের ফেসবুক আইডি থেকে এ ঘটনা ঘটানো হয়। সে ব্যাপারে এবার আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানালেন তিন অভিনেত্রীর একজন তানজিন তিশা।
ছোটপর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী বর্তমানে রয়েছেন আমেরিকাতে। দুটি শো-এর কাজ করছেন তিনি। সেখান থেকেই ফেসবুকে লম্বা একটি পোস্ট দিয়ে তিশা জানালেন, তিনি দেশে ফিরেই এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। তবে সেই ব্যবস্থা কি অভিনেতা শরীফুল রাজের বিরুদ্ধে নেবেন নাকি তার স্ত্রী পরীমনির বিরুদ্ধে, তা পরিষ্কার করেননি তিশা।
এই অভিনেত্রী তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন, যে বা যারা এই ছবি আর ভিডিও ফাঁসের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। সেক্ষেত্রে উঠে আসছে চিত্রনায়িকা পরীমনির নাম। অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামালের অভিযোগ, পরীমনিই রাজের আইডি থেকে ছবি আর ভিডিওগুলো ছেড়েছেন। তবে রাজের দাবি, তার আইডি হ্যাক হয়েছিল।
ফলে তানজিন তিশা ঠিক কার বা কাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন, তা বোঝা যাবে তিনি দেশে ফিরে ব্যবস্থা নেয়ার পরই। তার আগে চলুন দেখে আসি তিশা তার লম্বা পোস্টে কী লিখেছেন-
‘দুটি শো-তে অ্যাটেন্ড করার কারণে বেশ কিছুদিুন ধরে আমি আমেরিকাতে আছি । বাংলাদেশে যখন সকাল তখন এখানে গভীর রাত। এজন্য বাংলাদেশের খবরাখবর খুব বেশি জানি না আমি৷ আমাকে জড়িয়ে যে ঘটনাটা ঘটে গেছে, সেটি পরে আমি দেখেছি, জানতে পেরেছি।’
‘প্রথমত, বিষয়টি দুঃখজনক। এটা নিয়ে আমি বলতে চাই, স্যোশাল মিডিয়াতে আমার যে ভিডিও আপ করা হয়েছে সেটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত ভিডিও। ৬-৭ বছর আগে আমরা বন্ধুরা ফান করে ভিডিওটি করেছিলাম। যেহেতু এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত ভিডিও, তাই এটার এক্সপ্লেনেশন দেয়ার কিছু আছে বলে মনে করি না। প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব জীবন আছে, পার্সোনালিটি আছে, ব্যক্তিগত ব্যাপার আছে যেটাকে জাজ করার অধিকার অন্য কাউকে আমি দিতেও চাই না।’
‘তাই আমার দর্শক ও অনুরাগীদের উদ্দেশ্য এতটুকুই বলব, ৬-৭ বছর আগের সামান্য একটা ক্লিপ দিয়ে ব্যক্তি তানজিন তিশাকে জাজ করে ফেলবেন না, প্লিজ। আপনাদের ভালোবাসা আর দোয়ায় আমি আজ এই পর্যন্ত এসেছি… আমার অভিনয় আর ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা রাখবেন, আমি আমার অভিনয় দিয়েই আপনাদের কাছে বেঁচে থাকতে চাই সবসময়, প্রিয় হয়ে থাকতে চাই। যদিও আমি বলেছি আমার এই ঘটনা নিয়ে কাউকে এক্সপ্লেনেশন দিতে চাই না, তবে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী আর দর্শকদের যদি এই ঘটনা বিব্রত করে, কষ্ট দেয় আমি মন থেকেই দুঃখ প্রকাশ করছি।’
‘দ্বিতীয়ত, এই ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন চ্যানেল, পত্রিকা, অনালাইন নিউজে, ফেসুবকে গ্রুপে, কমেন্টে বলা হচ্ছে/লেখা হচ্ছে ‘শরীফুল রাজের সঙ্গে তিশার আপত্তিকর বা গোপন ভিডিও ফাঁস’। যথাযথ সম্মান নিয়েই আপনাদের বলছি, এই ভিডিওর মধ্যে শরীফুল রাজ কোথা থেকে এলো? কী গোপনীয়তা এখানে? তার ফেসবুক আইডি থেকে এটি প্রকাশ পেয়েছে বলেই কেন ভাবছেন সেখানে আমি তার সাথে আছি৷ ভিডিওতে আমি একা এবং সেটা কোনো আপত্তিকর বা গোপন ভিডিও না, বরং সেটা আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তের ৷ সুতরাং ‘আপত্তিকর বা গোপন ভিডিও ফাঁস’ শব্দগুলো কারেকশন করা উচিত। এটা বিব্রতকর এবং অসম্মানজনক।’
‘তৃতীয়ত— একজন মানুষের প্রাইভেসি, হেম্পার করা , হ্যারেজমেন্ট করা বা পারসোনাল ভিডিও অনুমতি ছাড়া পাবলিকলি প্রকাশ করা , এটা বিগ ক্রাইম। সো যার আইডি বা যিনি এটি আপ করেছেন, বাংলাদেশে ফিরে আমি তার বিরুদ্ধে আইনি উদ্যোগ নিচ্ছি। তবে ইতোমধ্যেই অনেকই ধারণা করতে পারছেন,অনেকের মুখে মুখেও এটি শোনা যাচ্ছে কে বা কারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আমি এখানে কারও নাম উল্লেখ করতে চাই না। আমি দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি সম্মান রেখে পদক্ষেপ নেব। সেই আইনই বলে দেবে কে বা কারা এই ব্যক্তিগত ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে আমার সম্মান নষ্ট করেছে, কে বা কারা এই ভয়ংকর অপরাধে জড়িত।’
‘চতুর্থত- শরীফুল রাজের আইডি থেকে ভিডিওগুলো আপ করা হয়েছে এবং রাজ তার ব্যক্তিগত আইডি থেকে দুঃখপ্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছে। শুধু দুঃখ প্রকাশেই কেন ঘটনা শেষ করতে চাইছ রাজ? এই যে তোমাকে জড়িয়ে কয়েকটা মেয়ের সম্মান নষ্ট হলো, তাদের ব্যক্তিগত ও ক্যারিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলল সবাই, পরিবারের সামনে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে, এত সিলি সিলি ক্যাপশন দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ ভিডিওগুলোকেও আপত্তিকর বানানো হলো, এই দায়ভার কী তোমার না? কারন তুমিই তো বলেছ তোমার আইডি হ্যাক করা হয়েছে। তোমার দায়িত্বশীলতার জায়গায় তুমি কী করছ? কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছ না? কেন এর পেছনের মূল হোতাকে খুঁজে বের করছ না?’
‘যদিও দেশে এসেই আমি এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেরব, তবুও রাজ আমি তোমার কাছ থেকে এতটুকু দায়িত্বশীল মনোভাব আশা করেছিলাম সত্যি।’
‘আসলে তানজিনা তিশা তার কাজ দিয়েই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছে এবং কাজ নিয়েই এই পৃথিবীতে যতদিন বেঁচে আছে দর্শকের মনে কাজ নিয়েই থেকে যেতে চায়। তাই দর্শকদের কাছে অনুরোধ, আপনাদের তানজিন তিশাকে কাজের মাধ্যমেই বাঁচিয়ে রাখুন।’
গত সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে কয়েকটি ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেগুলোর একটিতে রাজের সঙ্গে সিগারেট টানতে দেখা যায় অভিনেত্রী নাজিফা তুষিকে। অন্যগুলোতে মদ্যপ অবস্থায় দেখা গেছে তানজিন তিশা ও সুনেরা বিনতে কামালকে।
যদিও ছবি ও ভিডিওগুলো পোস্ট হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই রাজের আইডি থেকে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। ওই ভিডিওতে অভিনেত্রী সুনেরাহকে অসংলগ্ন ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলতে শোনা গেছে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে জোর চর্চা, সমালোচনা। এই জল কতদূর গড়ায়, এখন সেটাই দেখার।