আবাসন খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের পদ্ধতি পরিবর্তন চায় রিহ্যাব
আবাসন খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের পদ্ধতি পরিবর্তন করার অনুরোধ জানিয়েছেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) প্রেসিডেন্ট মো. ওয়াহিদুজ্জামান।
তিনি বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট পাশ হলে ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় প্রায় ৩০ শতাংশ হবে । এ পরিমাণ রেজিস্ট্রেশন ব্যয় পৃথিবীর আর কোথাও নেই, যা কমিয়ে ৭ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন। আবাসন খাতের সংকট ও উত্তরণের পথ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তৃতা উপস্থাপন করেন।
রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে আবাসন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রাখায় সরকারকে ধন্যবাদ। বাজেটে প্রবৃদ্ধি সম্ভব হবে যদি আবাসনসহ উৎপাদনমুখী খাত সচল থাকে। অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। এ দাবি ছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে রিহ্যাবের কোনো দাবি আমলে নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, দেশে অপ্রদর্শিত অর্থ রয়েছে। এ অর্থ মূল অর্থনীতিতে নিয়ে না এলে পাচার হয়ে দেশের বাইরে চলে যাবে। নৈতিকতার প্রশ্নে এটি মন্দের ভালো উদ্যোগ। রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কম হলে ক্রেতারা জমির সঠিক মূল্য দেখাতে উৎসাহিত হবেন। পাশাপাশি এতে রাজস্ব আয় কমবে না, বরং আরও বাড়বে। সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব করছি।
তিনি জানান, আবাসন খাতকে গতিশীল রাখার নীতিসহায়তা বাজেটে দৃশ্যমান নয়। বাংলাদেশের আবাসন শিল্প রক্ষার্থে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে আমাদের পাঁচটি প্রস্তাব রয়েছে। এগুলো হলো-জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ব্যয় হ্রাস করা, রিয়েল এস্টেট সেক্টরের বর্তমান অবস্থা ও বিশ্বের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় আবাসন ব্যবসায়ীদের আয়কর হ্রাস করা, সেকেন্ডারি মার্কেটের প্রচলন করা, মধ্যবিত্তদের ফ্ল্যাট ক্রয়ে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ক্রেতাসাধারণকে হোম লোন প্রদানের ব্যবস্থা করা এবং নির্মাণসামগ্রীর মূল্য হ্রাস করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
প্রস্তাবিত বাজেট কতটা ব্যবসাবান্ধব-এমন প্রশ্নের জবাবে রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, আংশিক ব্যবসাবান্ধব। আমাদের পাঁচ দাবি মেনে নিলে আবাসন খাতের জন্য ব্যবসা উপযোগী হবে এবারের বাজেট। নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং রাজউকের ড্যাপের কারণে ভবনের উচ্চতা কমে যাওয়ায় মানুষের মৌলিক অধিকার আবাসন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিুমধ্যবিত্তরা নিজেদের একটা আবাসন করার সাহস হারিয়ে ফেলছে। সরকারকে এসব দিক বিবেচনায় আবাসন খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে সহযোগিতা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট-১ লায়ন এমএ আউয়াল, ভাইস প্রেসিডেন্ট-২ মোহাম্মদ আক্তার বিশ্বাস, ভাইস প্রেসিডেন্ট-৩ ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) আব্দুর রাজ্জাক, ভাইস প্রেসিডেন্ট দেলোয়ার হোসেন, রিহ্যাবের প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ লাবিব বিল্লাহ, রিহ্যাবের পরিচালক আফম উবায়দুল্লাহ প্রমুখ।