Home খেলা সিরিজ জয়ে লিটনকে নিয়ে অস্বস্তি থাকলই
মে ৭, ২০২৪

সিরিজ জয়ে লিটনকে নিয়ে অস্বস্তি থাকলই

একটু ভালো বোলিং, আরেকটু ভালো ব্যাটিং। বাংলাদেশ দলের সমর্থকদের মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য জিম্বাবুয়ের এটুকুই যথেষ্ট ছিল।

আজ বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানে থামিয়ে তাড়া করতে নেমে লক্ষ্যটা প্রায় টপকেই গিয়েছিল সিকান্দার রাজার দল। জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ার পর লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা আরও একবার ম্যাচটাকে টেনে নিয়ে যান শেষ ওভার পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৫৬ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ৯ রানের জয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ৫ ম্যাচের এই সিরিজ ৩–০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের খেলা ছয়টি টি-টোয়েন্টি সিরিজের মধ্যে চারটিই জিতলেন নাজমুলরা।

প্রথম দুই ম্যাচের তুলনায় আজ জিম্বাবুয়ে রান বেশি করলেও দলটির ইনিংসের শুরুর গল্পটা একই রকম। টপ অর্ডার বাজেভাবে ব্যর্থ। এরপর শেষের দিকে দু-একজনের ‘ক্যামিও’। বুঝতেই পারছেন, আজও জিম্বাবুয়ের ইনিংস বাংলাদেশের বোলারদের একের পর এক উইকেট নেওয়ার ধারাবিবরণী ছাড়া কিছুই নয়।

৪২ রানে ৩ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন
৪২ রানে ৩ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন

আজও জয়লর্ড গাম্বি উদ্বোধনে নেমে কিছু করতে পারেননি। ৮ বলে ৯ রান করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে আউট হয়েছেন। আগের ম্যাচে ভালো করায় আজ ব্রায়ান বেনেটকে তিনে সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু ৮ বলে ৫ রান করে তানজিদ হাসানকে ফিরতি ক্যাচ দেন তিনি। প্রথম দুই ম্যাচের মতো আজও ব্যর্থ দুই অভিজ্ঞ ক্রেগ আরভিন ও সিকান্দার রাজা। সাইফউদ্দিনের বলে আরভিন বোল্ড, রিশাদ হোসেন দ্বিতীয়বারের মতো রাজাকে আউট করেন।

ওপেনিংয়ে নামা তাদিওয়ানাশে মারুমানি অবশ্য ১১তম ওভার পর্যন্ত টিকে ছিলেন। তবে তাঁর ২৬ বলে ৩১ রান ম্যাচের ফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি। ক্লাইভ মাদান্দে (১১) ও জোনাথন ক্যাম্পবেল (২১) দুই অঙ্কের ঘরে গেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা জিম্বাবুয়ের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

কিন্তু ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে নিয়ে ফারাজ আকরাম ৩০ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়ে জয়ের ক্ষীণ সম্ভাবনা জাগান। মাসাকাদজা ১৪ বলে ১৩ রান করলেও আকরাম ১৯ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ২৮ রান। তাসকিন ও সাইফউদ্দিনের ডেথ ওভারের বোলিং তা হতে দেয়নি।

ব্যাট হাতে আজও ব্যর্থ জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা
ব্যাট হাতে আজও ব্যর্থ জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা
বাংলাদেশ দলের ইনিংসের শুরুটা ছিল আগের দুই ম্যাচের মতোই বিবর্ণ। যাঁর রানে ফেরার অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট, সেই লিটন দাস আজও দৃষ্টিকটু ব্যাটিং করলেন।

প্রথম দুই ম্যাচে ১ ও ২৩ রানে আউট হওয়া লিটন থামলেন ১২ রানে এবং অবশ্যই সেটা ভুলে যাওয়ার মতো ১২ রান। ফারাজ আকরামের অনেক বাইরের বলে লেট কাটে মারা একটি বাউন্ডারি ছাড়া বাকি রানগুলো যেভাবে এসেছে, তাতে লিটন নিজেও গর্ববোধ করবেন না।

বেশ কিছু বল তিনি অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে টেনে খেলেছেন লেগের দিকে। পুল করতে গিয়ে শরীরের ভারসাম্য হারিয়েছেন। এরপর ব্লেসিং মুজারাবানির করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বলে লিটন অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্কুপ করতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনেন। এর আগের দুই বলেও স্কুপ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত ১৫ বলে ১২ রানে থামে লিটনের দুঃস্বপ্নের ইনিংস।

বাজে শট খেলে আউট হন লিটন
বাজে শট খেলে আউট হন লিটন

তানজিদ হাসান ও নাজমুল হোসেনও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৪ বলে ৬ রান করে রাজার বলে বোল্ড হন নাজমুল, তানজিদ করেছেন ২২ বলে ২১ রান। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আরও একটি ব্যর্থতার পর ইনিংস গড়ার দায়িত্ব বর্তায় তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলীর ওপর। দুজন মিলে শুরুতে কিছুটা সময় নিলেও বাংলাদেশের ইনিংসটাকে সঠিক দিশায় ফেরালেন। দুজন মিলে ৫৮ বলে যোগ করেন ৮৭ রান।

৩৫ বলে অর্ধশত করা হৃদয় শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ৩৮ বলে ৫৭ রান করে, মুজারাবানির ইয়র্কারে থামে হৃদয়ের ১৫০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস। জাকের আলীর ৩৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংসও থেমেছে মুজারাবানির ইয়র্কারে। দুই থিতু ব্যাটসম্যানের বিদায়ে পর শেষ দুই ওভারে মাহমুদউল্লাহ ও রিশাদ হোসেন ৭ বলে ১৭ রান যোগ করেন।

ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে তাওহিদ হৃদয়
ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে তাওহিদ হৃদয়

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৬৫/৫ (হৃদয় ৫৭, জাকের ৪৪, তানজিদ ২১, লিটন ১২, মাহমুদউল্লাহ ৯*, রিশাদ ৬*; মুজারাবানি ৩/১৪, রাজা ১/৩৮, ফারাজ ১/৪৪)।

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৫৬/৯ (ফারাজ ৩৪*, মারুমানি ৩১, ক্যাম্পবেল ২১, মাসাকাদজা ১৩, মাদান্দে ১১; সাইফউদ্দিন ৩/৪২, রিশাদ ২/৩৮, তাসকিন ১/২১, তানজিম ১/২৬, মাহমুদউল্লাহ ১/১)।

ফল: বাংলাদেশ ৯ রানে জয়ী।

সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ ৩–০ ব্যবধানে এগিয়ে।

ম্যাচসেরা: তাওহিদ হৃদয় (বাংলাদেশ)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *