ফের হাসপাতালে খালেদা জিয়া, নেওয়া হলো সিসিইউতে
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়েছে। রবিবার (৩১ মার্চ) রাত ২টা ৫৪ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান তিনি। সেখানে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন চিকিৎসকেরা।
শনিবার (৩০ মার্চ) দিবাগত রাতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে দলের মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শায়রুল কবির খান বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাসায় রেখেই চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তার মেডিকেল টিমের সদস্যরা। বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেডিকেল বোর্ড তাকে (খালেদা জিয়া) হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৩০ মার্চ দিবাগত রাত ২ টা ৩০ মিনিটে বাসা থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশ্য রওনা করে।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন।
সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর আগে টানা পাঁচ মাস হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে গত ১১ জানুয়ারি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর থেকে তিনি তার গুলশানের বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বুধবারও (২৭ মার্চ) খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সেদিন শুরুতে তাকে হাসপাতালে ভর্তির কথা ভেবেছিলেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা। পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বাসাতেই তার চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল বোর্ড।
এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকে চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বিএনপি প্রধানের পরিবারও বিভিন্ন সময়ে সরকারের কাছে অনুমতি চেয়ে আসছে। কিন্তু আইনমন্ত্রী বারবার বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় সাজা স্থগিত করার শর্তে খালেদার মুক্তি হওয়ায় চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাড়িতে থাকার এবং দেশ ত্যাগ না করার শর্তে তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। এরপর প্রতি ছয় মাস পরপরই তার এ মুক্তির সময় বাড়ানো হয়েছে।