উৎকণ্ঠায় দুই পরিবার, থামছে না স্বজনদের কান্না
সোমালিয়া জলদস্যুদের হাতে অপহৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ফায়ারম্যান মোশারফ হোসেন শাকিল ও ওয়েলম্যান আইনুল হক অভির বাড়িতে স্বজনদের কান্না থামছেই না। শাকিল আর আইনুলের জীবিত ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরা।
চার মাস পরেই দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা তাদের দু’জনের। পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েকটি পাত্রীও দেখে রেখেছে।
শাকিল চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা গ্রামের শামছুল হক ও আনোয়ারা বেগমের ৬ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট। আইনুল হক অভি ইছাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূঁইয়া গ্রামের সুজাউল হক ভোলা মিয়ার ছেলে। অভি স্বপরিবারে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি এলাকায় থাকেন। জলদস্যুদের হাতে আটকের পর তাদের ঘিরে পরিবারের সদস্যদের আশা এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
শাকিল চার মাস আগে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে যোগ দেন। এ চাকরি তার পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছিল। পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী এই সদস্যের জিম্মিদশায় আতঙ্কিত পুরো পরিবার। সন্তানের জীবিত ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন শাকিলের মা আনোয়ারা বেগম।
ছেলের শোকে কাঁদতে কাঁদতে শাকিলের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘তোমরা আমার আদরের ছোট ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও, জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও সরকারের প্রতি অনুরোধ—আমার সন্তানসহ যারা একসঙ্গে জিম্মি সবাইকে যেন তাদের মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।’
আইনুল হক অভির মা লুৎফা আরা বেগম বলেন, ‘বুধবার সকাল ৭টায় অভির সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে। সে বলে দস্যুরা আমাদের না মারলেও শুধু ভয় দেখাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ভয় দেখাচ্ছে। অফিসে গিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমাদের জন্য কিছু করতে বলো। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলো—আমাদের সাহায্য করতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ও দেশে আসার সময় গয়না কিনে আনার কথা ছিলো। আমরা তার জন্য মেয়ে দেখছি। আমার ছেলে যেন আমার বুকে ফিরিয়ে আসে—প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার একটাই চাওয়া।’
করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের শাকিল নামে একজন সোমালিয়ায় জলদস্যুদের হাতে জাহাজে আটক রয়েছে। তাকে ফিরে পেতে পরিবারের লোকজন আকুতি করছে। আমরা যতটুকু দেখছি, সরকার তাদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করছি, আটক হওয়া সবাই দেশে ফিরে আসবে।’