চবির অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, বহিষ্কার চেয়ে মানববন্ধন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিজ্ঞান অনুষদের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ওই শিক্ষকের বহিষ্কার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে প্লেকার্ড ও ফেস্টুন হাতে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা দুটি দাবি উত্থাপন করেন। প্রথমত বিশ্ববিদ্যালয়কে বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। দ্বিতীয়ত স্থায়ীভাবে ওই শিক্ষকের বহিষ্কার নিশ্চিত করতে হবে।
মানববন্ধনে রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সিতু বলেন, আমাদের সহপাঠীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে আমরা আজ আন্দোলনে নেমেছি। বিভাগের শিক্ষকরাও এতে সংহতি জানিয়েছেন। বিভাগের শিক্ষকরা এ ঘটনার সুরাহা নিয়ে সময় চেয়েছেন। আমরা এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আছি। যদি আমরা সুষ্ঠু বিচার না পাই তবে আরও কঠোর অবস্থানে যাব।
একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াকিন ইহসান বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আগেও শুনেছি। ওনার চরিত্রটাই এরকম। কিন্তু এতদিন এগুলো সামনে আসেনি। কেউ আত্মসম্মানের ভয়ে সাহস করে কোনো অভিযোগ করেনি। এই আপু সাহস করে অভিযোগ করেছে। এর একটি বিহিত হওয়া চাই।
এসময় বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার বলেন, আমাদের বড় আপুর প্রতি যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার জন্যই আমরা এখানে এসেছি। আমরা এমন শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার চাই। আর এমন ঘটনা অন্য কোনো নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে না ঘটে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা চাই।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশিষ পালিতের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বেলা সাড়ে ১১টায় একাডেমিক কমিটির সব শিক্ষক মিলে এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনায় বসেছি। কিন্তু আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা আছে কারণ আমাদের সব কিছুর অভিভাবক হচ্ছেন উপাচার্য মহোদয়। তিনিই বড় সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে থাকেন। তবে আমরা আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতদিন পর্যন্ত তদন্তের কাজ শেষ না হয় ততদিন পর্যন্তর অভিযুক্ত শিক্ষককে সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আনীত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রসায়ন বিভাগের একাডেমিক কমিটির সুপারিশের আলোকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত রসায়ন বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে আদেশক্রমে ওই শিক্ষককে বিরত রাখা হলো।
উল্লেখ্য, এর আগে বুধবার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বরাবর যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার লিখিত অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। যদিও অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল মতিন।