মধ্যরাতে থানায় গিয়ে নায়িকা মাহির যে অভিযোগ
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে জুতা মারার হুমকি দিয়েছেন নৌকার প্রার্থীর এক সমর্থক। শনিবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক ভিডিওতে মাহিকে জুতা দেখিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আপনার মতো মাহিয়া মাহিকে, এই যে দেখছেন এই জুতা? এই জুতা দিয়ে, একদম জুতা দিয়ে পিটানো উচিত আপনার মতো মেয়েকে। কারণ আপনি এমন একটা মেয়ে। আপনার মা এই চলচ্চিত্র জগতে যাওয়ার আগে আপনাকে নিষেধ করেছেন।’
এ ঘটনায় শনিবার রাত দেড়টার দিকে তানোর থানায় মাহিয়া মাহি নিজে উপস্থিত হয়ে ফেসবুকে ভিডিও পোস্টকারী মাহাবুর রহমান মাহামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন।
এ বিষয়ে তানোর থানার ওসি আব্দুর রহিম বলেন, ‘হুমকির অভিযোগ অধর্তব্য অপরাধ। এ কারণে বিজ্ঞ আদালতের অনুমতিসাপেক্ষে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
ওই যুবকের নাম মাহাবুর রহমান মাহাম। তার বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের কালনা পূর্বপাড়া গ্রামে। বাবার নাম মৃত ছদের আলী। এছাড়া তিনি তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের গাড়ি ভাঙচুর মামলার আসামি। তিনি বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের রাজশাহী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়ান। মাহাম এলাকায় বখাটে ছেলে হিসেবে পরিচিত।
তবে যোগাযোগ করা হলে মাহাম জানিয়েছেন, তিনি নৌকার সমর্থক। বর্তমানে দলীয় কোনো পদ নেই তার।
ঢাকাই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি প্রচারণার শুরুর দিন থেকেই এ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও এবারের নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীকে কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্য রাখছেন। ফারুক চৌধুরীর বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সামনে এনে মাহি এবার তাকে ভোট না দেওয়ার জন্য ভোটারদের আহবান জানাচ্ছেন। আর এ কারণেই ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে জুতা মারার হুমকি দেন মাহাম। যদিও কিছুক্ষণ পর তিনি সেই ভিডিও ফেসবুক আইডি থেকে ডিলিট করে ফেলেন।
মাহাম ভিডিওতে মাহিয়া মাহি সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। কারা সিনেমায় যায়, সেই প্রশ্নও তোলেন। বলেন, ‘আপনার মতো মাহিয়া মাহির দ্বারা তানোর-গোদাগাড়ীর উন্নয়ন তো দূরের কথা; হাজারও ছেলে নষ্ট হবে আপনার মতো দুশ্চরিত্রা মহিলা থাকলে। আপনার মতো বেয়াদব মহিলাকে আমি এখনো বলছি, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে নিয়ে আর একটা যদি বাজে মন্তব্য কখনো করেন, আপনাকে জুতা দিয়ে পিটানো উচিত। আপনি ওমর ফারুক চৌধুরীর বাসার কাজের মেয়ের যোগ্য না।’
যোগাযোগ করা হলে মাহাম বলেন, ভিডিও ছাড়ার পর রাজশাহী থেকে কয়েকজন সাংবাদিক ফোন করেছিলেন। তারা নানান কথা বলছেন। সেই কারণে ভিডিও ডিলিট করে দিয়েছি।
তবে এ আসনের নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন জানান, ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। অভিযুক্ত পক্ষের সঙ্গে তার কথা বলার প্রয়োজন নেই। তবে মাহির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে একটা অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ দিলে মাহামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।