ফাইনাল হতাশার হলেও টুর্নামেন্টটিতে সফলতা পেয়েছে বিসিবি
ঢাকঢোল পিটিয়ে ঝাঁকজমক আয়োজনে পর্দা উঠে এনসিএল টি-টোয়েন্টির শিরোপার। পরে আইসিসির বিশ্বকাপের মত ‘ক্যাপটেন্স ডে’ দিয়ে উদ্বোধন করা হয় টুর্নামেন্টটির। আর গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই ছিলো চমক। তরুণ একগাদা মুখ নিজেদের দিকে দিকে কেড়ে নেয় আলো। বলা যায় ঘরোয়া ক্রিকেট নতুন ফরম্যাটের টুর্নামেন্টের পুরোটাই ছিলো দুর্দান্ত। ব্যাটার-বোলার দুই পক্ষই ম্যাচগুলোতে দেখিয়েছিলো দাপট।
ধারণা করা হচ্ছিলো শেষটাও হবে তেমনি। তবে তা হয়নি। এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালটা ছিলো শুধূই বোলাররদের, ব্যাটারদের জন্য ছিলো এদিনটি অসহায়ত্বের! তাতে ফাইনালটি আর সেই আমেজ দেয়নি। তবুও বিসিবির চোখে আয়োজনটি সফলতা পেয়েছে। বিসিবি চিফ কো অর্ডিনেটর অব প্রোগ্রামের দায়িত্বে থাকা মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানিয়েছেন আয়োজনটিতে শতভাগের মধ্যে নব্বই ভাগই সফল হয়েছে তারা।
গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এনসিএলের ফাইনাল শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবির নির্বাচক নান্নু । সেখানেই এই টুর্নামেন্ট নিয়ে বলেন, ‘একশো তে একশো দেওয়া যাবে না, একশো তে নব্বই দিতে হবে। কারণ ফাইনাল ম্যাচটার জন্য ঐরকম উইকেট দেওয়া….এটা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিলো, প্রায় প্রতিদিনই দুটো যায়গা মিলিয়ে চারটা করে ম্যাচ হয়েছে। সেই হিসেবে উইকেটটা ম্যানটেইন করা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং ছিলো। তবে সব মিলিয়ে বলবো উইকেটটা আমরা যা চেয়েছিলাম তার থেকে অনেকটা ভালো আচরণ করেছে। যদিও ফাইনাল ম্যাচটা লো স্কোরিং হয়েছে।’
তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে টুর্নামেন্টটির যাত্রা শুরু হয়েছে সেটাতে সফল হয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। আসন্ন বিপিএল ও দেশের ক্রিকেটারদের ঘাটর্তি মেটাতেই ঘরোয়া ক্রিকেটে এই ফরম্যাটে টুর্নামেন্টের আয়োজন। জাতীয় দল ও পাইপলাইনে থাকা ক্রিকেটাররা যেনো কুড়িওভারের ফরম্যাটে নিজেদের ঘার্টতি মিটিয়ে উন্নতি করতে পারে সেটাই ছিলো বিসিবির লক্ষ্য। পাশাপাশি তরুণ ক্রিকেটারদেরও এই ফরম্যাটে সামর্থ্যে দেখা হয়েছে নির্বাচকদের। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো ফিডব্যাক আছে, অনেক গুলো খেলোয়াড়কে হয়তো এখান থেকে নির্বাচকরা তাদের নজরে নিয়ে এসেছে। আমি মনে করি ভবিষ্যতে যদি এই টুর্নামেন্টটি ধারাবাহিক ভাবে আয়োজন করতে পারি তাহলে আমাদের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যে ঘাটতিটা আছে তা অনেকটা পূরণ করতে পারবো।’
যদিও এই টুর্নামেন্ট দুই ভেন্যুতে প্রতিদিন চারটি করে ম্যাচের মধ্য দিয়ে ১৪ দিয়ে ৩২ ম্যাচ দিয়ে শেষ হওয়ায় খেলোয়াড়দের অভিযোগ রয়েছে। দ্রুত একটার পর একটা ম্যাচ খেলায় তাদের ওপর দিয়ে বেশ চাপ গিয়েছে। এ নিয়ে নান্নু বলেন , ‘আমরা শুরু থেকেই অন্তত তিনটি ভেন্যুতে এই টুর্নামেন্টটি আয়োজন করতে চেয়েছিলাম। তাহলে এক ভেন্যুতে ত্রিশ শতাংশ করে ম্যাচ খেলতাম খেলোয়াড়রাও বিশ্রাম পেতো। তাতে ওদের মানসিকতাও বেশ চাঙ্গা থাকতো। তবে তা আমরা পারিনি একটি ভেন্যুর জন্য। তার উপর অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হতো এই টুর্নামেন্টটাকে কারণ সামনে বিপিএল রয়েছে। তো সেই হিসেবে চিন্তা করে আগামীতে আশা করি পরিকল্পনাটা পুরোপুরি করবো যাতে তিনটা থেকে চারটা ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারি।’
এদিকে টুর্নামেন্টটিতে আট দল সাজানো হয় দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে। ছিলো না কোনা বিদেশি খেলোয়াড়। শুধু তাই নয় জাতীয় দলের একাধিক খেলোয়াড়ও খেলেনি এই টুর্নামেন্টটে। আবার যেই কয়জন খেলেছে তাড়াও পুরো টুর্নামেন্ট দলের সঙ্গে থাকেনি। দুইটা চারটা ম্যাচ খেলেই চলে গিয়েছে। বলতে লোকাল ক্রিকেটাররাই নিজেদের পারফর্ম দিয়ে আকর্ষণীয় করে রেখেছিলো গোটা আসর। তবে ভবিষ্যতে এই টুর্নামেন্টে লোকালদের পাশাপাশি জাতীয় দলের খেলোয়াড়দেরও রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন নান্নু। তিনি মনে করেন লোকালদের এবং জাতীয় দলের মিশ্রনে দল গঠন করলে টুর্নামেন্টটির প্রতিদ্ব›দ্বীতা আরও বাড়বে। বলেন, ‘আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে ন্যাশনাল পুলের খেলোয়াড়রা সবাই যেনো এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারে। পাশাপাশি প্রথম শ্রেণীর যে চার দিনের ম্যাচ হয় ঐটাও যেনো এক টানা শেষ না করে খানিকটা বিরতি দিয়ে চালাতে যাতে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ ম্যাচ খেলতে পারে। এমন একটা পরিকল্পনাই আমরা বোর্ডে দিবো। আশা করছি ভবিষ্যতে আমরা এভাবেই আগাবো।’