যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত স্থানে থাকবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা
প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হল।
ইত্তেফাক
খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানিতে সাড়া নেই:
দরপত্র আহ্বান করেও খোলা বাজার থেকে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানির জন্য দরদাতা পাচ্ছে না রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা। সর্বশেষ পৃথক তিনটি দরপত্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক দরপত্র জমা না হওয়ায় দরপত্র বাতিল করে দিয়েছে সংস্থাটি।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, আগামী ৮ জানুয়ারি এলএনজি সরবরাহের জন্য সর্বশেষ দরপত্র আহ্বান করে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। এ দফায় কোনো প্রতিষ্ঠানেই দরপত্র জমা দেয়নি। এর আগে ১ জানুয়ারির জন্য নির্ধারিত দরপত্রে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। তার আগে ২৫ ডিসেম্বরের জন্য ডাকা দরপত্রে দুইটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। কিন্তু পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল (পিপিআর) অনুযায়ী দরপত্রে অন্তত তিন জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ না করলে তা গ্রহণযোগ্য হয় না, বরং বাতিল হয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে এলএনজি আমদানি শুরু হয়। দায়মুক্তির ‘বিদ্যুত্ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০-র এর এতোদিন এলএনজি আমদানি করা হতো। দরপত্র প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরি ছিল না। সম্প্রতি সরকার বিশেষ বিধানটি বাতিল করায় খোলাবাজার থেকে দরপত্র ছাড়া নতুন করে এলএনজি আমদানি করা সম্ভব নয়। ঐ কর্মকর্তা বলেন, দরপত্র প্রক্রিয়ায় পিপিআর এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সর্বশেষ দরপত্রে অপেক্ষাকৃত কম দরপ্রস্তাব পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু ন্যূনতম দরদাতার শর্ত পূরণ করতে না পারায় দরপত্রটি সম্পন্ন করা যায়নি। এখন পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার।
দেশে গত প্রায় দেড় দশক ধরে গ্যাসের সরবরাহে ঘাটতি চলছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংকট তীব্র হওয়ায় এলএনজি আমদানি করে ঘাটতি কিছুটা কমানো হয়েছে। দেশে দৈনিক ৪৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। বছরখানেক ধরে এ সরবরাহ দৈনিক গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে। এমন পরিস্থিতিতে তিন দফায় দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারায় খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানির শিডিউল কিছুটা এলোমেলো হয়ে গেছে। শিগিগরই পুনঃদরপত্র ডেকে তা সম্পন্ন করতে না পারলে পরিস্থিতি সমস্যাজনক হয়ে উঠতে পারে। বাড়তে পারে গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি।
স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির জন্য ‘বিদ্যুত্ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০’ এর আওতায় ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। ঐ আইনের আওতায় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে সরবরাহকারীর তালিকা প্রস্তুতের জন্য আগ্রহপত্র (ইওআই) আহ্বান করা হয় ২০১৭ সালে। নির্ধারিত সময়ে দাখিল করা ১৭টি প্রতিষ্ঠান এসএসপিএ অনুস্বাক্ষর করলেও ১৪টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় পেট্রোবাংলা। যা পরবর্তীতে ২৩টিতে উন্নীত করা হয়। তাদের মধ্যে থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনে আসছে বাংলাদেশ।
প্রথম আলো
গুমের নির্দেশদাতা হাসিনা, প্রমাণ পেয়েছে কমিশন:
দেশে গত ১৫ বছরে সংঘটিত বিভিন্ন গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।গতকাল শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দেওয়া কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গুমের ঘটনায় জড়িতদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন।
এ বিষয়ে পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়। তাতে বলা হয়, ‘গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এ ছাড়া হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার গুমের ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশত্যাগ করেন। এর পরপর মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে তাঁকে জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত একাধিক হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের বিশেষ শাখার সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁরা বিদেশে চলে গেছেন বলেও প্রচার রয়েছে।
গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গতকাল বিকেল পাঁচটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনটি জমা দেয়। তাতে বলা হয়, গুমের ঘটনায় কমিশনে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
দ্য ডেইলি স্টার
ACC, NBR, CID teams to probe 10 corporate giants:
দেশের আলোচিত ১০টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পাচার করা অর্থ ফেরাতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডর (এনবিআর) সমন্বয়ে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই একটি যৌথ অনুসন্ধানী দল গঠন করা হবে।
ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বেক্সিমকো, বসুন্ধরা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, শিকদার গ্রুপ ও আরামিট গ্রুপ।
যৌথ এই অনুসন্ধানী দলটি পাচারের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস দলটিকে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেবে। অনুসন্ধানী দলটির কার্যালয় হবে বিএফআইইউ বা বাংলাদেশ ব্যাংক।
মানবজমিন
বিরোধীদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবে প্রচার করেছে আওয়ামী লীগ:
বাংলাদেশে বিরোধী রাজনীতিকে বিগত সরকার সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু মানুষ বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তারা অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ২০২৩ সালে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার্ষিক সন্ত্রাস বিষয়ক রিপোর্টে এসব কথা বলেছে।
সারা বিশ্বে ওই বছর ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনা নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে- ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম ২০২৩’। বাংলাদেশ অংশে বলা হয়, ওই বছরে বহুজাতিক সন্ত্রাসী সহিংসতার কোনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
বিশেষত কর্তৃপক্ষ উগ্র জঙ্গি, বিশেষ করে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট গ্রুপ আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এবং আইসিস সংশ্লিষ্ট জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষিত বাংলাদেশ পুলিশ ইউনিটগুলো সন্দেহজনক কয়েক ডজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে।
ইন্টারপোলের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করে বাংলাদেশ। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ জাতীয় পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের একটি ওয়াচলিস্ট তৈরি করেছে। কিন্তু আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে কার্যকরভাবে তা শেয়ার করা হয়নি।
রিপোর্টে আরও বলা হয়, মে মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে দু’জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। এরজন্য সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদী উগ্রপন্থি কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) দায়ী করে। একই রকম হামলায় মার্চ মাসে আরেক সেনাসদস্য নিহত হন।
যুগান্তর
গুমের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা:
গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত এ সংক্রান্ত কমিশন। এ কাজে শেখ হাসিনা ছাড়াও প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা মিলেছে কমিশনের তদন্তে।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশও করেছে কমিশন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা।
শনিবার গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন (দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসাপিয়ারেন্স) প্রধান উপদেষ্টার কাছে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বিকাল ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তদন্ত কমিশনের সদস্যরা ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি জমা দেন। কমিশন সদস্যরা এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ১৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেন বলে জানিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এছাড়াও হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সম্পৃক্ততাও পাওয়া গেছে।
যাদের মধ্যে আছেন-সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
কালের কণ্ঠ
যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত স্থানে থাকবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা:
গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা উন্মুক্ত স্থানে টানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতিটি জেলা-উপজেলায় সরকারি অফিসের নোটিশ বোর্ডের পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানে (পাবলিক প্লেস) এই তালিকা টানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে স্থানীয় জনগণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে অবগত হতে পারে; কারো বিরুদ্ধে ‘অমুক্তিযোদ্ধা’ বা ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’র অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে যেকোনো নাগরিক অভিযোগ জানাতে পারে। যাচাই শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাতিল করা হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ।
বন্ধ হবে সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কেউ মুক্তিযোদ্ধা হলে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে মামলা হবে। ফেরত দিতে হবে ভাতাসহ সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা। তবে কেউ স্বেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করে গেজেট বাতিলের আবেদন করলে তাকে সহায়তা দেবে সরকার।
এ ক্ষেত্রে তাকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী। শনিবার তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগের সরকারের তালিকা অনুযায়ী গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে অমুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। আমরা ওয়েবসাইটে অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ চেয়েছি। এ পর্যন্ত স্বল্পসংখ্যক আবেদন পেয়েছি। কাঙ্ক্ষিত সাড়া মিলছে না। আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় এরই মধ্যে অমুক্তিযোদ্ধাদের স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। যারা স্বেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করবে, তাদের আমরা সম্মান দেব। দায়মুক্তি দেওয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, “এ ছাড়া আমরা চাই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করতে স্থানীয় জনগণ সরকারকে সহায়তা করুক। এ জন্য প্রতিটি জেলা-উপজেলায় সরকারি অফিসের নোটিশ বোর্ডের পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানে এ তালিকা টানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে স্থানীয় জনগণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে অবগত হতে পারে। কারো বিরুদ্ধে ‘অমুক্তিযোদ্ধা’ বা ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’র অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে যেকোনো নাগরিক অভিযোগ জানাতে পারে। যাচাই শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাতিল করা হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ। বন্ধ হবে সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কেউ মুক্তিযোদ্ধা হলে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। ফেরত দিতে হবে ভাতাসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা।”
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর তিন দিন পর গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক। এরপর গত ১৫ আগস্ট সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি ও আধাসরকারি চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের একটি তালিকা তৈরি হবে। সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজনের চাকরি হয়েছে, এখানে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা এবং মুক্তিযুদ্ধ না করে যারা মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এর পরই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করতে নানা উদ্যোগ শুরু করে মন্ত্রণালয়। তৈরি হয়েছে ‘অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ অভিযোগ ফরম’। এ ফরম মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সরকারের কাছে অভিযোগ করা যাবে। এরই মধ্যে কয়েক শ অভিযোগ জমা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। তবে কাঙ্ক্ষিতসংখ্যক অভিযোগ না পাওয়ায় বিকল্প চিন্তা করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।
সমকাল
৩২ বিচারপতির সরকারি বাসায় ‘অবিচার’:
উচ্চ আদালতের ৩২ বিচারপতির বাসায় সরকারি কর্মচারীকে (এমএলএসএস) দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করতে বাধ্য করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এতে ১৯ বিচারপতির পরিবারের বিরুদ্ধে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের কথা উঠে এসেছে। এ ছাড়া ১৬ বিচারপতি ও সাতজনের পরিবারের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, তাদের মুখের ভাষা অশালীন। এ বিষয়ে তিন সদস্যের জাজেস কমিটি অনুমোদন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে ১০২ বিচারপতি কর্মরত। একজন বিচারপতি প্রতি মাসে ৩২ হাজার টাকা গৃহস্থালি ভাতা পান। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিচারপতির আদালতের চেম্বারের জন্য একজন পিয়ন এবং বাসার কাজের জন্য একজন করে দারোয়ান ও বাবুর্চি দেওয়া হয়।
তবে বেশ কয়েকজন বিচারপতি প্রভাব খাটিয়ে তাদের বাসায় দুই থেকে ছয়জন এমএলএসএস নিয়েছেন। এর মধ্যে চার অবসরপ্রাপ্তসহ হাইকোর্ট বিভাগের ৩২ বিচারপতির বাসায় ৭০ জন (১০ নারীসহ) এমএলএসএসকে কাজে বাধ্য করানোর অভিযোগ উঠেছে।
দেশ রূপান্তর
আইনি লড়াইয়ে অনাগ্রহী আ.লীগ:
গণআন্দোলনে টানা ১৫ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন মামলায় একের পর এক গ্রেপ্তার হচ্ছেন দলটির প্রভাবশালী নেতারা। যাদের মধ্যে রয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য থেকে শুরু করে সাবেক মন্ত্রী-সংসদ সদস্য (এমপি) এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা।
ভারতে আশ্রয় নেওয়া দলীয় প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ গ্রেপ্তার নেতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গুলি চালিয়ে হত্যার অভিযোগে এরই মধ্যে মামলা হয়েছে আড়াই শর বেশি। এর মধ্যে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দলটির শীর্ষ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গণহত্যার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর তাদের অনেককে ট্রাইব্যুনালে হাজিরও করা হয়েছে।
তবে মামলার আসামি হলেও এখনো গ্রেপ্তার না হওয়া আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হচ্ছে তা আইনগতভাবে মোকাবিলা করার কথা ভাবছেন না তারা। এসব মামলাকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়রানিমূলক ও বিদ্বেশপ্রসূত’ উল্লেখ করে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার কথা জানিয়েছেন।
বণিক বার্তা
আইএফআইসি আন্তর্জাতিক ব্যাংক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে পতিত:
দেশে সরকারি-বেসরকারি অর্থায়নে প্রথম বিনিয়োগ কোম্পানি ‘ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্স’ বা আইএফআইসি লিমিটেড। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বিনিয়োগ কোম্পানিটির লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশী বিনিয়োগকে বৈশ্বিক অঙ্গনে নিয়ে যাওয়া।
লক্ষ্য বাস্তবায়নে শুরুর দিকে বেশ তৎপর ছিল কোম্পানিটি। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে সে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত ও পতিত হয়ে পড়ে আইএফআইসি। বিনিয়োগ কোম্পানি আইএফআইসির হাত ধরে ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘ব্যাংক অব মালদ্বীপ লিমিটেড’। এটি ছিল মালদ্বীপে প্রতিষ্ঠিত প্রথম জাতীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির মালিকানার ৪০ শতাংশ ইকুইটির জোগান দিয়েছিল আইএফআইসি।
মালদ্বীপের ওই ব্যাংকটির পুরো ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও ছিল আইএফআইসির হাতে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া আইএফআইসির কর্মকর্তারা এশিয়ার দ্বীপদেশটির মানুষকে ব্যাংকিং শিখিয়েছে। যদিও সময়ের পরিক্রমায় ব্যাংকটির মালিকানা থেকে আইএফআইসি ছিটকে পড়েছে। আর ‘ব্যাংক অব মালদ্বীপ লিমিটেড’ এখন দেশটির সেরা ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
নব্বইয়ের দশকের শেষদিক থেকেই পথ হারাতে শুরু করে আইএফআইসি ব্যাংক। ওই সময় থেকেই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী অলিগার্কদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। যখন যে দল ক্ষমতায় যাচ্ছে, তখন সে দলের সুবিধাভোগীরা ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ দখলে নিচ্ছেন। দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারদরের কারসাজিতেও আইএফআইসি ব্যাংক জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে।
গত দেড় দশকে ব্যাংকটিতে জমাকৃত গ্রাহকদের আমানতের একটি অংশ ঋণের নমে লুণ্ঠিত হয়েছে। এ সময়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তার ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান আইএফআইসি ব্যাংক পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।