স্বামীর আঘাতে পঙ্গু এতিম রেখা বেগম,দু মুঠো ভাত দেয়ারও কেউ নেই, অর্থাভাবে বন্ধ চিকিৎসা।
বালী তাইফুর রহমান তূর্য, নলছিটি প্রতিনিধি :
নেই বাপ,নেই কোনো ভাই,নেই উপার্জনক্ষম কেউ।বৃদ্ধা মা,তিনটি ছোট্ট শিশু সন্তানের জন্ম দিলেও সেই সন্তানদের নিজের কোলে তোলার ক্ষমতা নেই রেখার।আপন পুরুষ বলতে ছিলো একমাত্র স্বামী কিন্তু সেই ভরসার স্বামীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতেই সে এখন পঙ্গু।মাদকাসক্তি আর পরকিয়ার কারণে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে জবাই করতে চেয়েছিলেন স্বামী মুরাদ,কিন্তু ভাগ্যক্রমে গুরুতর আহত হয়ে প্রানে বেচে যায় রেখা।কিন্তু দেবর,ননদরা কোনোমতে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু সেখান থেকে চিকিৎসকরা ঢাকা নেয়ার নির্দেশনা দিলেও সেই ছারপত্র গোপন করে ঔষধ কিনে রেখাকে ফেলে আসেন বাপের বাড়িতে।বৃদ্ধা মায়ের ঘারে বারে বোঝা,চোখে বাড়ে অশ্রু।নিজেরই পেট চলে না,উপার্জনের একটা ছেলে সন্তানও নেই।তারউপরে মেয়ের চিকিৎসা যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।দুধের একটা শিশু সহ তিনটি বাচ্চা নিয়ে যেন এক মহাসাগর বিপদে পরে গেছেন রেখার মাও।
বলছি, নলছিটিতে মাদকাসক্ত স্বামীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত এতিম রেখার কথা।এখন অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় পঙ্গু হওয়ার পথে।ছোট ছোট তিনটি বাচ্চার ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।
দুইটি হাতই অচল হয়ে গেছে,অস্ত্রোপচার করাতে না পারলে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাবে সে।কোনোমতে অর্থ জোগাড় করে এক হাতের চিকিৎসা করিয়েছিলেন স্থানীয় এক সমাজকর্মী।কিন্তু তিনিও আর খরচ জোগাড় করতে না পেরে তিনিও এখন দিক বিদিক খুজে পাচ্ছেন না।বাবা বা ভাই না থাকায় সেই রেখার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে সহযোগিতা করা স্থানীয় সমাজকর্মী বালী তাইফুর রহমান তূর্য বলেন,স্বামীর হামলায় প্রানে বেচে গেলেও মেয়েটিকে সারিয়ে তোলা আরেকটি যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা তো পাওয়াই যায়নি,উল্টো হয়রান হতে হয়েছে।হাসপাতালের ছাড়পত্রটি পর্যন্ত লুকিয়ে রেখেছিলো তারা,সেটিও দেয়নি।অনেক কস্টে বিভিন্ন যায়গা থেকে কিছু টাকা জোগাড় করে এ পর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়েছিলাম কিন্তু এখন আর টাকা জোগাড় করতে না পেরে দিক বিদিক খুজে পাচ্ছি না।
রেখার মা মালেকা বেগম অশ্রুসিক্ত হয়ে বলেন,আল্লায় লইয়া গেলেও বাচতাম।নিজেই খাইতে পারি না,এইয়ার মইদ্দ্যে মাইডারে কোপাইয়া জামাই অচল কইরা দেছে।এক মাইয়ায় দার কইরা তিরিশ হাজার দিয়া একটা হাতের অপারেশন করাইছে,হেইয়াও কেমনে দিমু জানি না।নাই একটা পোলা,নাই স্বামী আমিই কেমনে খাই,ওরেই কেমনে খাওয়াই।এহন আরেকটা হাতের চিকিৎসা না করাইতে পারলে মাইডা জীবনে খাইবে ক্যাম্নে(কিভাবে)।
এসময় কাদতে কাদতে তিনি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতা কামনা করেন।
আহত রেখাও অশ্রুসিক্ত হয়ে বলেন,আমার দুইটা হাতই কোপাইয়া অচল কইরা দেছে,জবাই দিতে চাইছিলো গলায়ও ছুড়ি দিয়া পোচ দেছেলে,আল্লাহ বাচাইছে।বাচ্চারা ছোট,ছোট্ট মাইয়াডারে দুধও খাওয়াইতে পারি না।হাত দুইটা ভালো না হইলে আমিই বা কেমনে চলমু,মাইয়া পোলা কেমনে পালমু।মায় বুড়া মানুষ,আইজ আছে কাইল নাই মোর হাতই যদি না লারাইতে পারি বাচমু কেমনে!
রেখার সেই অশ্রু আর সন্তানদের মায়াবি চাহনি যেকোনো মানুষকে অশ্রুসিক্ত করে দেবে।তারা সর্বশেষ মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন যাতে অন্তত চিকিৎসা করিয়ে হাত দুটো দিয়ে কিছু করে খেতে পারেন।
রেখার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন: +880 1794-515040,
01715763140