Home সারাদেশ সুগন্ধার তীর যেন ময়লার ভাগার,হুমকিতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ।গার্বেজ স্টেশন নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
নভেম্বর ৬, ২০২৪

সুগন্ধার তীর যেন ময়লার ভাগার,হুমকিতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ।গার্বেজ স্টেশন নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।

বালী তাইফুর রহমান তূর্য, নলছিটি(ঝালকাঠি)সংবাদদাতাঃ
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা তীরবর্তী লঞ্চঘাট এলাকায় উন্মুক্ত স্থানে ফেলা হচেছ ময়লা আবর্জনা। সরোজমিন ঘুরে দেখা যায় নদীর তীরবর্তী অংশে ময়লা আবর্জনা স্তুপ করে রাখা হয়েছে। তীব্র গন্ধে স্থানীয়রা নাকাল হয়ে ওই এলাকা এড়িয়ে অন্যত্র দিয়ে চলাচল করছেন। তবে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। তারা নলছিটি পৌর কতৃপক্ষকে সেখানে ময়লা না ফেলার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেছেন। তবে তাদের অনুরোধ উপক্ষো করে বছরের পর বছর সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। নলছিটি পৌর এলাকায় ময়লা আবর্জনা ফেলার কোন সুনির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় সারা শহর থেকে সংগ্রহ করা ময়লা আবর্জনা পৌরসভার পরিছন্নতা কর্মীরা সেখানে ফেলে আসেন। ফলে পরিবেশ দূষনসহ নদীর পানিও দূষিত হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী মানুষজন আক্রান্ত হচেছ নানান পানিবাহিত রোগে।
স্থানীয় সমাজকর্মী বালী তূর্য বলেন,এই জনপদটি গড়েই উঠেছিলো সুগন্ধা নদীর অববাহিকা কেন্দ্র করে।সেখানে এই সুগন্ধার তীরে ময়লার ভাগার ১৬৫ বছর বয়সী একটি নগরীর অযত্নে অবহেলায় পরিচালিত হওয়ার প্রমান।অথচ এখানে ময়লা সরিয়ে একটি ওয়াকওয়ে বা পার্কের মতো বসার বেঞ্চ নির্মান করে দিলে মানুষ বিকেলে বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারতো।।আমরা বারবারই বলে এসেছি নলছিটি পৌরসভায় একটি পরিকল্পিত গার্বেজ স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া দরকার।অবশ্য ইতোমধ্যে কয়েক দফা ভারতীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগে আহবানও জানানো হয়েছিলো অতি সম্প্রতি তবে এখনো পর্যন্ত তাদের পরিকল্পনা জানা যায়নি।আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রানপন সহযোগিতা করে চেষ্টা চালিয়ে যাবো এই নগরীটিকে একটি সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য।
তিনি আরও বলেন, নলছিটি বন্দরটি নদীমাতৃক হওয়ায় দূর দূরান্ত থেকে অনেক ব্যবসায়ী নৌকায় করে এখানে তাদের মালামাল বিক্রি করতে আসেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত পন্য নৌকায় করে নিয়ে আসেন। তাদের নৌকা নোঙর করার ঠিক পাশেই ময়লা আবর্জনার স্তুপ যা তাদের জন্য সবদিক দিয়েই নানান সমস্যার সৃষ্টি করছে। এর ভিতর অনেকে দূরদূরান্ত থেকে সাপ্তাহিক বাজারের আগের দিন রাতে এসে এখানে নৌকায়ই রাত্রি যাপন করেন। তাদের জন্য নদীর পানি খুবই গুরুত্বপূর্ন। এছাড়া বাজারের পাশেই একটি মসজিদ আছে। অনেক সময় বিদুৎ সমস্য দেখা দিলে মুসল্লীদের নদীর পানি ব্যবহার করতে হয়। এই মসজিদে প্রায় সময় তাবলিগ জামাতের মুসল্লীরা অবস্থান করেন তাদের নদীতে গোসলসহ অন্যান্য কাজ করতেও অসুবিধা হয়। এসব বিষয়কে মূল্যায়ন করে এর আশু সমাধান করা উচিত।
স্থানীয় বাসিন্দা খন্দকার জাহিদুল ইসলাম জানান, এখানে ময়লা ফেলা কারনে যারা নদীর পানি ব্যবহার করতেন তারা নদীর পানি দূষিত হওয়ায় তা ব্যবহার করতে পারছেন না। অনেকেই আবার নানান পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার দেখা যায় বন্যার সময় এই ময়লা আবর্জনা বন্যার পানির সাথে লোকালয়ে প্রবেশ করে। যাতে স্থানীয়রা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এখানে অনেক পরিবার আছে যারা নদীর পানির উপর নির্ভরশীল যারা নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্য নদীর পানি ব্যবহার করে থাকেন তারাও এখন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কিছু লোক নিয়ে আয়ের হওয়ায় বাধ্য হয়ে এসব পানি ব্যবহার করছেন। তাদের এছাড়া কোন উপায়ও নেই। আবার তারা আর্থিকভাবে দূর্বল হওয়ায় বাসস্থান পরিবর্তনও করতে পারছেন। এসব বিবেচনায় রেখে পৌর কতৃপক্ষের উচিত এখানে ময়লা না ফেলে আধুনিক কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা। সেটা না পারলে আবাসিক এলাকা থেকে দূরে কোথাও মাটি খুড়ে গর্ত করে তার ভিতর ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা উচিত বলে আমি মনে করি। আমরা অতিদ্রæত সেটাই দেখতে চাই।
এ ব্যাপারে নলছিটি পৌরসভা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু এখন জানেত পেরেছি তাই যতদ্রæত সম্ভব এর ভালো একটা সমাধান খুজে বের করার চেষ্টা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *