ঢাকা চট্টগ্রাম খুলনায় সাশ্রয়ী মূল্যে তরিতরকারি বিক্রি করছে সরকার
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা মহানগরীতে কৃষিপণ্যের ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) করছে সরকার।দেশে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ব্যাপক পরিমাণ কৃষিপণ্য নষ্ট হয়েছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদার তুলনায় জোগান কমে গেছে। ফলে মূল্য বেড়ে গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের।
এমন বাস্তবতায় সরকার কৃষিপণ্য ওএমএসের মাধ্যমে কৃষিপণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে তরিতরকারি ক্রয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।
গত ১৫ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগরীর ২০টি পয়েন্টে কৃষিপণ্য ওএমএস কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের ভিত্তিতে ১৮ অক্টোবর ঢাকা মহানগরীতে আরও ১০টি পয়েন্ট ওএমএসের আওতায় আনা হয়।
বর্তমানে ঢাকায় খাদ্য ভবন, রামপুরা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, নতুনবাজার, উত্তর মুগদা, বাসাবো, বছিলা, রূপনগর, মিরপুর, কালশী, কামরাঙ্গীরচর, গাবতলী, হাজারিবাগ, রাজারবাগ, মালিবাগ, কাঁঠাল বাগান, রায়ের বাজার, পলাশি মোড়, মহাখালী, বেগুনবাড়ি, জিগাতলা, মোহাম্মদপুর, আদাবর, তালতলা, মানিক মিয়া এভিনিউ ও বিএডিসি (৪টি)সহ মোট ৩০টি পয়েন্টে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে ২২ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ৫টি পয়েন্টে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হয়। সরকারি এ কর্মসূচি চালুর পর নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে এটি ব্যাপক সাড়া ফেলায় ২৭ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে আরও ৫টি পয়েন্ট বৃদ্ধি করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগরীতে বর্তমানে চকবাজার, দেওয়ানহাট, ষোলশহর, ফিরিঙ্গিবাজার, ফিরোজশাহ্, সিটি গেট, হালি শহর, আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট ও ফ্রিপোর্টসহ মোট ১০টি পয়েন্টে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি চলমান আছে।
এছাড়াও খুলনা মহানগরীর নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি প্রদানে ২৮ অক্টোবর থেকে ৫টি পয়েন্টে চালু হয়েছে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি। মহানগরীর শিববাড়ি মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খালিশপুর ও দৌলতপুরে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলছে।
এ কর্মসূচির আওতায় ডিম, আলু, পেঁয়াজ, পটল, পেঁপে, করলা, কচু, শসা, লাউসহ কয়েকটি কৃষিপণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতারা ১ ডজন ডিম ১১০ টাকা, ১ কেজি আলু ৩০ টাকা, ১ কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ১ কেজি কাঁচা পেপে ১৫ টাকা, ১ কেজি পটল ৩০ টাকা, ১ কেজি করলা ৪০ টাকা, ১ কেজি শসা ১৫ টাকা, ১ কেজি কচু ৩০ টাকা, ১ পিস লাউ ২০ টাকা দরে কিনতে পারছেন।
সপ্তাহের সাত দিনই এই বিক্রয় কার্যক্রম চালু আছে। এছাড়াও সব গ্রাহক যেন পণ্য পায়- তা নিশ্চিত করার জন্য প্যাকেজ আকারে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে এবং একই সঙ্গে সব পণ্যের সর্বোচ্চ ক্রয়সীমাও উল্লেখ করা হচ্ছে। বর্তমানে সারা দেশে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা মহানগরীর মোট ৪৫টি পয়েন্টে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর দিনে প্রায় ১২-১৩ হাজার নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য বিক্রি করছে।
বিক্রি করা কৃষিপণ্যগুলো পণ্যের উৎপাদনস্থল বা হিমাগার পর্যায় থেকে সরাসরি আনা হচ্ছে। ফলে উৎপাদক পর্যায়েও একদিকে যেমন ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার ফলে ভোক্তারাও সাশ্রয়ী মূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারছে।