গ্রেফতার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখা রাখা যাবে না
গ্রেফতার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখা রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক নেতারা।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক নেতা সাঈদ খানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে একাংশ ) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন। তারা অবিলম্বে সাঈদ খানের মুক্তি, সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি জানান।
ডিইউজে’র সিনিয়র সহসভাপতি রফিক মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী। ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরদার ফরিদ আহমেদ, বিএফইউজে সহ সভাপতি খায়রুল বাশার, সাবেক সহ সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, ডিইউজে সহসভাপতি রাশেদুল হক, বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদ সদস্য অপর্ণা রায়, ডিইউজে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক কবি রফিক লিটন, নির্বাহী পরিষদ সদস্য তালুকদার রুমি,গাযী আনোয়ার, সাবেক দফতর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম অমর, সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য এইচ এম আল আমিন, মফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ডিইউজে’র যুগ্মসম্পাদক দিদারুল আলম।
সমাবেশে ডিইউজে’র সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টুসহ সিনিয়র সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সত্য সংবাদ পরিবেশনের কারণে সাঈদ খানকে গ্রেফতারের অভিযোগ করে রুহুল আমিন গাজী বলেন, সাংবাদিকরা কারো রক্ত চক্ষুকে ভয় পান না। যতই বাধা আসুক না কেন, সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা থেকে বিরত রাখা যাবে না।
তিনি বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চারজন সাংবাদিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে বর্তমান সরকারের আমলে সাগর-রুনিসহ ৬১জন সাংবাদিককে হত্যা করা হলেও একটি হত্যারও বিচার হয়নি। কোটাবিরোধী আন্দোলন-পরবর্তী সারাদেশে গণগ্রেফতার চলছে। গভীর রাতে ব্লক রেইড দিয়ে ডিবি পরিচয়ে ঘরে ঘরে ঢুকে মোটা অংকের চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। অথচ এর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন কোটা আন্দোলনকারিদের দমনে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। সবকিছু ব্যর্থ হওয়ার পর পুলিশকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়ে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মসনদ টিকিয়ে রাখতে ১৮ কোটি মানুষকে গ্রেফতার করবেন? এটা সম্ভব নয়। গণগ্রেফতার বন্ধ করে মোবাইল ইন্টারনেট খুলে দিন। কারণ, মোবাইল ইন্টারনেট ছাড়া কোনো সভ্য সমাজ চলতে পারে না। তিনি অবিলম্বে কোটা বিরোধী আন্দোলনে সাংবাদিকসহ নিরস্ত্র শত শত ছাত্র হত্যার বিচার দাবি জানান।
খুরশীদ আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীরা কথায় কথায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ‘আগুন সন্ত্রাসী’ বলে অভিযোগ করে আসছেন। অথচ কোটাবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে শ্রমিক লীগের জনৈক নেতা বাসে আগুন দেয়ার জন্য ৫ লাখ টাকায় একজনের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট করার ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ বেস্টনীর মধ্যে দুটি বাসে আগুন দেয়া হয়। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন-জনমানব শূন্য এ এলাকায় কারা বাসে আগুন দিয়েছে?
তিনি বলেন, মিথ্যাচার করে টিকে থাকতে পারবেন না। হত্যার বিচার একদিন হবেই।
সরদার ফরিদ আহমদ বলেন, সাংবাদিকদের কাজ সত্য প্রকাশ করা। সাঈদ খান সেই কাজটিই করেছেন। সত্য প্রকাশ করা কি অপরাধ? সত্য কখনো গোপন থাকে না। সরকার যে ন্যারিটিভ তৈরি করছে তা জনগণ বিশ্বাস করে না। কোরণ ঘটনা কী ঘটেছে তা সাধারণ মানুষ নিজের চোখে দেখেছে। তিনি সকল সাংবাদিকদের প্রকৃত চিত্রটি তুলে ধরার আহ্বান জানান।