Home বিশ্ব পবিত্র কাবার চাবিরক্ষক ড. শায়খ সালেহ আল শাইবার মৃত্যু
জুন ২২, ২০২৪

পবিত্র কাবার চাবিরক্ষক ড. শায়খ সালেহ আল শাইবার মৃত্যু

আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবাঘরে যাওয়ার জন্য প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলিমের মন ব্যাকুল হয়ে থাকে। কিন্তু কাবাঘরে প্রদক্ষিণ করলেও পবিত্র এই ঘরে চাইলেই সবাই প্রবেশ করতে পারে না। এজন্য যেমন অনুমতির প্রয়োজন হয়, তেমনি তালাবদ্ধ থাকার কারণেও কেউ ঢুকতে পারে না পবিত্র কাবাঘরে। শতকের পর শতক ধরে একটি পরিবার বংশ পরম্পরায় পবিত্র কাবাঘরের চাবির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

পবিত্র কাবাঘরের বর্তমান চাবিরক্ষক ছিলেন ড. শায়খ সালেহ আল শাইবা। হারামাইন শরিফাইন নিজেদের ভেরিফায়েড এক্স পেজে এক পোস্ট জানিয়েছে, পবিত্র কাবাঘরের এই অভিভাবকের মৃত্যু হয়েছে।

পোস্টে বলা হয়েছে, ড. শায়খ সালেহ আল শাইবা কাবাঘরের ১০৯তম অভিভাবক ছিলেন। তিনি হজরত উসমান ইবনে তালহা রাদিআল্লাহু আনহুর বংশধর ছিলেন। ফজরের নামাজ শেষে বায়তুল্লায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে মক্কার জান্নাতুল মুআল্লায় তাকে দাফন করা হয়।

প্রাক ইসলামী যুগ থেকেই শাইবা গোত্রের কাছে কাবাঘরের চাবি সংরক্ষিত থাকত। মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে ওই গোত্রের উসমান ইবনে তালহা রাদিআল্লাহু আনহুর কাছে চাবি হস্তান্তর করে তাকে সম্মানিত করেন। এরপর থেকে সেই ধারা এখনও অব্যাহত আছে।

উসমান ইবনে তালহা রাদিআল্লাহু আনহুর বংশধরেরা পর্যায়ক্রমে পবিত্র কাবাঘরের চাবি বহন করে আসছেন। তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়েই বিভিন্ন সময় সৌদি আরবের বাদশাহ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পবিত্র কাবাঘরে প্রবেশ করে থাকেন। তারাই কাবার দরজা খুলে দেন।

আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পবিত্র মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন সালেহ আল শাইবা। ইসলামিক স্টাডিজের ওপর তার ডক্টরেট ডিগ্রি রয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করতেন। ধর্ম এবং ইতিহাস নিয়ে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ করেছেন সালেহ আল শাইবা। কাবাঘরের চাবির রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও পবিত্র ঘরের ভেতর পরিষ্কার রাখা, কিওয়াকে ইস্ত্রি করা এবং ছিঁড়ে গেলে সেলাই করাও এই পরিবারের দায়িত্ব। ২০১৩ সালে তার চাচা আব্দুলকাদের ত্বহা আল শাইবি মারা গেলে কাবাঘরের চাবির রক্ষক হন সালেহ আল-শাইবি।

এ পর্যন্ত অসংখ্যবার পবিত্র কাবাঘরের তালা-চাবি পরিবর্তন করা হয়েছে। পবিত্র এই ঘরের চাবি একটি বিশেষ ব্যাগে রাখা হয়। পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ যে কারখানায় তৈরি হয়, সেখানেই এই ব্যাগ বানানো হয়।

আব্বাসীয়, আইয়ুবীয়, মামলুকীয় ও ওসমানিয়া যুগে কয়েকবার পবিত্র কাবাঘর মেরামত করা হয়েছে। তখন প্রয়োজন মতো নতুন তালা-চাবিও বানানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে পবিত্র কাবাঘরের চাবি পরিবর্তন করা হয়। সেই তালা-চাবিই এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *