বেনজীরের রিসোর্টের আয় যাবে সরকারি কোষাগারে
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা বিপুল সম্পত্তি আদালতের নির্দেশনায় ক্রোক করা হয়েছে। এগুলোর দেখভাল করবে এখন সরকার। জব্দ হওয়া সম্পত্তি মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল রিসোর্ট। এটি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল গ্রামে অবস্থিত। নাম সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্ক।
সাভানা ইকো রিসোর্ট রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির সদস্য দুদক গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মসিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘এত বড় সম্পদ ক্রোক করে তা ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ দুদকের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। তাই শুরুতে হয়তো একটু বেগ পেতে হচ্ছে। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জয়ী হবে দুদক। সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে। রিসিভার কমিটি সফলতার সঙ্গে রিসোর্টটি চালু রেখে আয় করা অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করবে, যা ইতিহাস সৃষ্টি করবে।’
জানা যায়, বেনজীর পরিবারের অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে খুব বেশি বিচলিত নয় দুদক। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণে তাদের বেশি বেগ পেতে হবে না। তবে স্থাবর সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে দুদক হিমশিম খাচ্ছে। এজন্য পর্যায়ক্রমে বেনজীরের বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদের রিসিভার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। সাভানা ইকো রিসোর্টের পর বান্দরবানের খামার, গুলশানের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ অস্থাবর সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে রিসিভার নিয়োগ করা হবে।
জানা যায়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত এত বিপুল সম্পদের তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরও বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করতে আরও কিছু সময় নিতে চায় দুদক। এ সময়ের মধ্যে বেনজীর পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ, সম্পদবিবরণী নোটিশ জারিসহ বেশকিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। শিগ্গিরই মামলা করা হবে। সাবেক পুলিশপ্রধানের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ভয়ংকর। দুদক আইন অনুযায়ী যেগুলো অপরাধ ধরা হয়, এর সবই করেছেন বেনজীর।
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল বেনজীর আহমেদ, স্ত্রী জিসান মির্জা, দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ অনুসন্ধান টিম অভিযোগটি অনুসন্ধান করছে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক নিয়ামুল আহসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন।
২৬ মে বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। এগুলোর মধ্যে রাজধানীর গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট, সাভারের একটি জমি ছাড়াও মাদারীপুরের ১১৪টি দলিলের সম্পত্তি রয়েছে। এর আগে ২৩ মে ৮৩টি দলিলে ক্রয়কৃত সম্পত্তি ক্রোক করা হয়। সেই সঙ্গে ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও তার সিকিউরিটিজের (শেয়ার) টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।