‘এই পরিবারে জন্ম হওয়াটাই ভুল হয়েছে’
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থিতা নিয়ে দ্বন্দ্বে বড় ভাই আবদুল কাদের মির্জাকে ইঙ্গিত করে তার ছোট ভাই ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, এই পরিবারের জন্ম হওয়াটাই আমার ভুল হয়েছে। আমি যদি এটা জানতাম, তাহলে আমার মাকে বলতাম, আমাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলো।’
শুক্রবার রাতে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে নির্বাচনি প্রচারণার সময় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন শাহাদাত হোসেন।
শাহাদাত হোসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। তার (শাহাদাত) আরেক ভাই আবদুল কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র।
এবারের উপজেলা নির্বাচনে শাহাদাতের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরীর আনারস মার্কার পক্ষে ভোটের মাঠে নেমেছেন আবদুল কাদের মির্জা। মাঠে নেমে গত ১৫ মে বসুরহাট পৌরসভার মিলনায়তনের তার পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরীর এক মতবিনিময় সভায় ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনকে কুলাঙ্গার আখ্যা দিয়ে কাদের মির্জা বলেন, শাহাদাত তার ভাই নন।
এ প্রসঙ্গে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি জন্ম থেকে তাদের সহযোগিতা করে আসছি। কিন্তু তারা আমাকে কখনো সহযোগিতা করেনি। আমার মনে হয়, এই পরিবারের জন্ম হওয়াটাই আমার ভুল হয়েছে। আমি যদি এটা জানতাম, তাহলে আমার মাকে বলতাম আমাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলো।’
বড় ভাই ওবায়দুল কাদের ও আবদুল কাদের মির্জাকে ইঙ্গিত করে শাহাদাত আরও বলেন, ‘তারা দুজনই দাবি করে, তারা দুজন ভাই। আমরা ভাই না। শিয়াল-কুকুর। আমরা কুলাঙ্গার। বলে কিসের ভাই? এই বিচার কার কাছে দেব আমি? প্রশাসন তো আমার বিরুদ্ধে। তারা সকাল-বিকাল আমার লোকদের নির্যাতন করছে। আমার একটা লোক রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারে না, তাকে ধরে নিয়ে বলে তোমার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এখানে আওয়ামী লীগের লোকদেরও বিএনপি-জামায়াত বলে এখন নির্যাতন করা হয়েছে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে উপজেলা নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা ফেরত পান শাহাদাত হোসেন। শাহাদাত হোসেন বলেন, এটি আমাদের প্রথম বিজয়; জনগণ যদি ভোট দিতে পারে ২৯ মে চূড়ান্ত বিজয় হবে।
গত ৫ টি নির্বাচন কোম্পানীগঞ্জে সিজারে হয়েছে। একটি নির্বাচনও হয়নি। এবারও তারা তা চাইছে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, প্রতিপক্ষ প্রার্থী নির্বাচনি মাঠে হেলমেট বাহিনী নামিয়ে দিয়েছেন। সব সদস্য বসুরহাটসহ গোটা কোম্পানীগঞ্জে তার (শাহাদাত) সাধারণ কর্মী ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানা হুমকি দিচ্ছেন। এ কারণে সুস্থ নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমি অসহায় মানুষ, আমার ওপরে আল্লাহ আছে, আর নিচে জনগণ আছে। ২৯ তারিখে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারি, ইনশাআল্লাহ আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, সদর ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে সেতুমন্ত্রীর ভাইসহ চারজন প্রার্থী হয়েছেন।
বাকি তিন প্রার্থী হলেন-উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও ঢাকার ব্যবসায়ী গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল (আনারস), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল (দোয়াত কলম) এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওমর আলী রাজ (মোটর সাইকেল)।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন (চশমা), মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী মামুন হোসেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী পারভীন আক্তার (ফুটবল), ফাতেমা বেগম পারুল (প্রজাপতি)।