Home রাজনীতি আ.লীগ-বিএনপি যাকে ইচ্ছে তাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ঢুকিয়েছে – জি এম কাদের
মার্চ ২৭, ২০২৪

আ.লীগ-বিএনপি যাকে ইচ্ছে তাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ঢুকিয়েছে – জি এম কাদের

আওয়ামী লীগ-বিএনপি যাকে ইচ্ছে তাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ঢুকিয়েছে এমন অভিযোগ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিজেদের লোকের নাম ঢুকাতেই নতুন করে বারবার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করেছে। দেশে নাকি পঞ্চাশ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা আছে। এগুলো বৈষম্য সৃষ্টির জন্য করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দলের চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গত সাত জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সঠিকভাবে হয়নি মন্তব্য করে জি এম কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আমিও এ ব্যাপারে সংসদে অনেকবার কথা বলেছি।

দেশের সংকট নিয়ে নিজ দলের নেতারা কথা না বলায় ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, সমস্যা হচ্ছে, আমাদের দলের কিছু লোক কথা বলে না। তাই দীর্ঘদিন ধরেই দল হিসেবে আমরা সংসদে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। কারণ, সরকার আমাদের দলের মাঝে একটা বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছে। আমাদের মত দল ধ্বংস হয়ে গেলে, সরকারও সুখে থাকবে না।

দেশের মানুষের কি ভোটাধিকার আছে- এমন প্রশ্ন রেখে বিরোধী দলের এই নেতা বলেন, কেন জিনিসপত্রের দাম কমছে না? কেন প্রতিদিনের লাগা আগুন বন্ধ করতে পারছে না? কেন ভেজাল বন্ধ করতে পারছে না? কারণ হচ্ছে, কোথাও জাবাবদিহিতা নেই। এখন সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না। আইন করা আছে, সরকারের সমালোচনা করলেই আইন মাফিক মামলা হয়।

বৈধভাবেই আমাদের দাবিয়ে রাখার ব্যবস্থা করেছে সরকার এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, এটা কোনো স্বাধীন দেশে হতে পারে? মানুষের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাঙ্ক্ষিত সমাজ নির্মাণ হয়নি এবং আমরা সেদিকে যাচ্ছি না। আমরা উল্টোপথে চলছি।

বেশিরভাগ মানুষই অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, মানুষ জানে না, কাল তার বাড়িটি দখল হয়ে গেলে বিচারের জন্য কার কাছে যাবে। এমন অসংখ্য অভিযোগ আমরা জানতে পারছি।

যে প্রক্রিয়ায় দেশের রাজনীতি চলছে, তাতে দেশের কোনো আদর্শিক রাজনৈতিক দল টিকবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এতে যৌক্তিক রাজনীতি বন্ধ হয়ে যাবে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। শুধু সরকার হিসেবেই আওয়ামী লীগ ঠিক আছে, কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যে চরিত্র হওয়ার কথা তা থেকে তারা দূরে সরে গেছে। সামনের দিকে পাপেট ছাড়া রাজনৈতিক দল থাকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যুক্তির বাইরে কিছু করতে চাই না, কিন্তু গায়ের জোরে কেউ দাবিয়ে রাখতে চাইলে সেখানে গায়ের জোরের বিকল্প নেই। সকলে মিলে সহনশীল হলে, যুক্তি দিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব। দেশ ডুবিয়ে দিয়ে, কেউ বিদেশে গিয়ে সুখে থাকবেন- তা হবে না। দেশের মানুষের অভিশাপ থেকে কেউ মাফ পাবে না। দেশকে বাঁচাতেই হবে।

 

ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ করে জি এম কাদের বলেন, ইতিহাস বিকৃতির মধ্য দিয়ে কিছু মানুষকে উপরে তুলে ধরা হচ্ছে, আর কিছু মানুষকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। ইতিহাস বিকৃত করে তা ধরে রাখতে আবার আইন করা হচ্ছে। বৈষম্য লালন ও বিভক্তি সৃষ্টি করে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে লুটপাট চলছে।

আলোচনায় অংশ নেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আখতার, শেরীফা কাদের, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন, মো. বেলাল হোসেন, এম এ সোবহান, এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, আল মামুন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *