Home বানিজ্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে এমডির পরিবারের কেউ থাকতে পারবে না
ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪

ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে এমডির পরিবারের কেউ থাকতে পারবে না

যিনি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হবেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে তার পরিবারের কোনো সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, যিনি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হবেন, তিনি অন্য কোনো ব্যবসায়ে বা পেশায় নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে তার কোনো ব্যাবসায়িক স্বার্থ জড়িত থাকতে পারবে না। একইভাবে ব্যাংকের কোনো পরিচালকের মালিকানাধীন বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারবে না।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একজন উপযুক্ত, পেশাগতভাবে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ হওয়া আবশ্যক। ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবসায়িক ও প্রযুক্তিগত ঝুঁকি মোকাবিলায় অধিকতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নীতিমালা জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যিনি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হবেন, তিনি কোনো ফৌজদারি আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হতে পারবেন না। বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলেছে, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি হবেন, যার সম্পর্কে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলায় আদালতের রায়ে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য নেই। তিনি কোনো নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের বিধিমালা, প্রবিধান বা নিয়ামাচার লঙ্ঘনজনিত কারণে দণ্ডিত হননি। তিনি এমন কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না যার নিবন্ধন অথবা লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে অথবা কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানটি অবসায়িত হয়েছে।

তিনি এমন কোনো কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত ছিলেন না যার নিবন্ধন অথবা লাইসেন্স তার সরাসরি বা পরোক্ষ অপরাধজনিত কারণে বাতিল করা হয়েছে। তিনি অর্থ-আত্মসাৎ, দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতি ও নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বা পরিচালক বা কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকাকালীন স্বীয় পদ হতে অপসারণ/বরখাস্ত/অবনমিত হননি বা অব্যাহতি প্রাপ্ত হননি।

এমডি ও সিইও নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতা, উপযুক্ততা ও অভিজ্ঞতার মাপকাঠি নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আলোচ্য পদে নিয়োগ পেতে হলে তাকে যে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ন্যূনতম স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হতে হবে। তবে অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং, ব্যবস্থাপনা কিংবা ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে উচ্চতর প্রাতিষ্ঠানিক বা পেশাগত শিক্ষাকে অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এছাড়া ডিজিটাল ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী নিয়োগের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়কে দেওয়া হবে আলাদা গুরুত্ব।

শিক্ষাজীবনের এমডি ও সিইওদের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ থাকতে পারবে না। গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রকাশিত ফলাফলের ক্ষেত্রে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার ক্ষেত্রে জিপিএ ৩.০০ এর কম এবং অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত সিজিপিএ এর ক্ষেত্রে ৪.০০ পয়েন্ট স্কেলে ২.৫০ এর কম ও ৫.০০ পয়েন্ট স্কেলে ৩.০০ এর কম হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

ব্যাংক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাংকিং পেশায় সক্রিয় কর্মকর্তা হিসেবে কমপক্ষে ২০ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পূর্ববর্তী পদে কমপক্ষে ০২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ন্যূনতম বয়স হবে ৪৫ বছর এবং সর্বোচ্চ ৬৫। সাধারণভাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগের মেয়াদ হবে তিন বছর, তবে তিনি পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর বয়স যদি ৬৫ বছর অতিক্রান্ত হতে তিন বছরের কম সময় থাকে তবে ততটুকু সময়ের জন্যও তাকে নিয়োগ দেওয়া যাবে।

নীতিমালায় বলা হয়, নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানো এবং অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা যুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি আমানতকারীদের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পালন এবং লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে। তবে ব্যাংক কোম্পানিতে এমডি ও সিইও নিয়োগ বা পুনঃনিয়োগে আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *