ইবিতে নবীন ছাত্রকে ছাত্রলীগের নির্যাতন, শিবির নেতৃবৃন্দের নিন্দা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্তৃক নবীন ছাত্রকে নগ্ন করে রাতভর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ।
মমঙ্গলবার এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জঙ্গিবাদী ছাত্রলীগের সন্ত্রাস চলছে। গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের গণরুমে নবীন এক ছাত্রকে নগ্ন করে রাতভর নির্যাতন করেছে মুদাচ্ছির খান কাফি, মোহাম্মদ সাগরসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এ সময় নবীন শিক্ষার্থীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল, রড দিয়ে মারধর ও নাকে খত দিতে বাধ্য করা হয়।নির্যাতনকারী সন্ত্রাসীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। আমরা এ নিকৃষ্ট ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
গত বছরের ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ফুলপরী নামের এক নবীন ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে রাতভর নির্যাতন ও ভিডিও ধারণ করে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদাসহ ছাত্রলীগ নেত্রীরা। এ ঘটনায়ও ছাত্রলীগ দেশবাসীর ঘৃণা ও ধিক্কারের কুড়িয়েছিল।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “সার্বিকভাবেই সন্ত্রাসকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে ছাত্রলীগ নামক জঙ্গিবাদী সংগঠনটি। ছাত্রলীগের প্রকাশ্যে ভয়ংকর আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার, প্রদর্শন ও ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, মাদক গ্রহণের বিকৃত দৃশ্যও অহরহ দেখতে হচ্ছে দেশবাসীকে। সিট বাণিজ্য, পদ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, সরকারি প্রকল্প থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস, ইভটিজিংসহ সকল অপকর্মকে ছাত্রলীগ আজ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। বাকৃবি, ইবি, রাবি, কুবি,খুবিসহ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে ছাত্রলীগ। বারবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিনষ্ট করা হচ্ছে। ছাত্রলীগের বেপরোয়া সন্ত্রাসের কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেবে, তা মেনে নেওয়া হবে না। অবিলম্বে জাতির কলঙ্ক, মানবতাবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জান-মাল-ইজ্জতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। বিশেষ করে প্রতিটি ক্যাম্পাসে গেস্টরুম নামের টর্চার সেল ও র্যাগিং বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় ছাত্রসমাজ নিজেরাই ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নেবে। তখন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার সন্ত্রাসীদের মদদ দানকারী সরকার ও প্রশাসনকেই নিতে হবে।”