Home রাজনীতি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৪ এর প্রথম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত
জানুয়ারি ১৭, ২০২৪

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৪ এর প্রথম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত

 বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৪ এর প্রথম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার রাজধানীর শহীদ আব্দুল মালেক মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর, সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, নূরুল ইসলাম বুলবুল ও সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান। বৈঠকে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দ অংশগহণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “দ্বীনের প্রতিটি দায়িত্বই মহান আল্লাহ প্রদত্ত। এ দায়িত্ব পালনে আমাদেরকে নির্ভীক ও দৃঢ় হতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্ব পালন অন্য দায়িত্বের চেয়ে আলাদা। এখানে ইলম অর্জন, আমল ও দাওয়াতের সমন্বয় থাকতে হবে। দায়িত্বশীলদের জ্ঞানার্জনের মূলভিত্তি হলো কুরআন-হাদিস এবং মূল লক্ষ্য হলো মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি।

মনে রাখতে হবে, আমরা মহান রবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের শপথ নিয়ে ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছি। এ পথে এগিয়ে যেতে দায়িত্বশীলদের সার্বিক জীবনে কুরআনের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। একই সাথে জনশক্তি ও সর্বস্তরের জনগণকে কুরআনি জীবনে অভ্যস্ত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষিত মানুষদেরকে কুরআনের সাথে বেশি করে সম্পৃক্ত করতে হবে। কেননা, তারাই সমাজ ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।”

তিনি বলেন, “দাওয়াতই হলো ব্যক্তি ও ইসলামী আন্দোলনের সফলতার মূলভিত্তি। সুতরাং দাওয়াতি কাজকে সারা জীবনের লক্ষ্য বানাতে হবে। এক্ষেত্রে আকর্ষণীয় নৈতিক চরিত্রের দাওয়াত সবচেয়ে কার্যকরী, যার প্রমাণ ইসলামী ছাত্রশিবির নিজেই। অন্যদিকে দাওয়াতি কাজসহ সকল কাজে মহান আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও সুদৃঢ় বিশ্বাস রেখে নির্ভয়ে এগিয়ে যেতে হবে। জীবন-মৃত্যু, সফলতা-বিফলতা, সংকট-প্রতিকূলতা—সর্বক্ষেত্রে সর্বদা আমরা মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করি এবং এটাই আমাদের এগিয়ে চলা ও সাহসের মূলভিত্তি।

আমাদের এগিয়ে চলায় রাসূলুল্লাহ সা. হলেন পথনির্দেশক, যিনি সমস্ত দুনিয়া ও প্রতিকূলতার বিপরীতে গিয়ে দাওয়াতি কাজ করেছেন। আমরা দ্বীনের জন্য সকল ত্যাগ, দুঃখ-কষ্টের বিনিময়ে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি চাই। এটাই প্রকৃত মুসলমানের সফলতা।

সুতরাং আমাদের দৃঢ়তার সাথে পথচলা অব্যাহত রেখে প্রমাণ করতে হবে জালিমের জুলুম ও সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্র কোনো কিছুই আমাদের সামান্যতমও দমিয়ে দিতে সক্ষম নয়, ইনশাআল্লাহ।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “দেশ ও জাতি বিশেষ করে ইসলামী আন্দোলন নিয়ে শুধু স্বৈরাচারী ইসলামবিরোধী সরকারই নয়; বরং আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ষড়যন্ত্র এখন সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। কিন্তু আমরা তাতে সামান্যতম বিচলিত নই। কারণ, আমরা সেই রাসূল সা.-এর প্রদর্শিত পথে চলি, যিনি সারা দুনিয়ার সকল মতবাদ ও ষড়যন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করে মহান আদর্শের মিশন নিয়ে একাই ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছিলেন।

রাসূল সা. দাওয়াতের মাধ্যমে গণভিত্তি তৈরি করে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। আমাদেরও বিকল্প কোনো পথ-মত নেই। পরিস্থিতি যাই হোক, সাহসিকতার সাথে সর্বস্তরের মানুষের কাছে ইসলামী আদর্শ ও দ্বীন প্রতিষ্ঠার দাওয়াত পৌঁছানো এবং তাদের সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “ইসলামী ছাত্রশিবির আরশের অধিষ্ঠিত মহান রবের দিকে তাকিয়ে জমিনে পথ চলে। সুতরাং কোনো কঠিন পরিস্থিতি বা প্রতিকূলতাই আমাদের সামান্যতম সময়ের জন্য দমিয়ে দিতে পারেনি এবং পারবেও না, ইনশাআল্লাহ।

আমরা সচেতনতার সাথেই আমাদের গন্তব্য ও জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। আমরা এমন এক মহান আদর্শ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করেছি, যা মহান আল্লাহ প্রদত্ত এবং দুনিয়া-আখেরাতের সাথে সম্পৃক্ত। আগামী দিনে এ দায়িত্ব পালনে দাওয়াত, আমানতদারিতা, জ্ঞানের জগতে শীর্ষে থাকা, উন্নত নৈতিকতা, নিজেদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা আরো গতিশীল হবে, ইনশাআল্লাহ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *