Home নির্বাচন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, এবার দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে শোকজ।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, এবার দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে শোকজ।
তাইফুর রহমান, ঝালকাঠি(নলছিটি) প্রতিনিধিঃ- নির্বাচনকালীন সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত, সরকারী
দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ঢাকায় অবস্থান করায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদকে কারন দর্শাতে বলা হয়েছে। বরিশাল বিভাগের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল তাকে শোকজ করেন। ৬ জানুয়ারি ২৭.২৪-০০১ স্মারকে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কঠোর নির্দেশনা অমান্য করায় এ শোকজ দেয়া হয়েছে তাঁকে। ইতিপূর্বে তত্তাবধায়কের বিভিন্ন দুর্নীতি সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশ করায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবার অজুহাতে নিজেকে সৎ দাবি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। এবার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আলোচিত সমালোচিত সেই তত্তাবধায়ক ডা. শামিম আহমেদকে শোকজ করেছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এবিষয়ে এখন তিনি কি বলবেন? এ প্রশ্ন এখন সর্বমহলে ঘুরপাক খাচ্ছে।
তথ্যানুসন্ধানে জান যায়, সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক শামিম আহমেদ গত ৭ জানুয়ারি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কর্মস্থলে না থাকার উদ্দেশ্যে ৫ জানুয়ারি ঝালকাঠি ত্যাগ করেন।
তিনি তার ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা উল্লেখ করে ৩ দিনের ছুটির আবেদন করেন বিভাগীয়
পরিচালকের কাছে। কিন্তু গত ৬ জানুয়ারি স্মারকের আবেদনে স্বাক্ষর করে ৫ জানুয়ারি কর্মস্থল ত্যাগ করেন। যদিও তিনি আবেদনে উল্লেখ করেন ৬ জানুয়ারি অফিস শেষে কর্মস্থল ত্যাগ করতে ইচ্ছুক। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এবিএম ইমাম হোসেনকে তত্তাবধায়কের দায়িত্ব দিয়ে যান। তত্তাবধায়কের দায়িত্ব প্রাপ্তির চিঠি কত তারিখ পেয়েছেন জানতে চাইলে ডা. ইমাম হোসেন জানান, ৬ জানুয়ারি মেইলে পেয়েছি। কার মেইল থেকে চিঠি পেলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি নিরব থাকেন।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানতে পেরে এর সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। এক পর্যায়ে তারা খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বরিশাল বিভাগের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এ শোকজ দেন। কর্মস্থলে অনুপস্থিতির জন্য তত্তাবধায়ককে ৩ দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর চিঠিতে উল্লেখ করে বলা হয়, দ্বাদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের কর্মস্থলে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
কিন্তু মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের এই কঠোর নির্দেশনা থাকলেও আপনি একটি স্বাস্থ্য সেবা
প্রতিষ্ঠানের প্রধান পদে থেকেও নির্বাচনের আগের দিন কর্মস্থল ত্যাগ করেন। যা অনভিপ্রেত ও গণকর্মচারী শৃংখলা আচরণ বিধি পরিপন্থি। তাই কেন এই সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন পত্র প্রাপ্তির ৩ দিনের মধ্যে বিনা ব্যর্থতায় জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শামিম কর্মস্থলে যোগ দিয়ে
কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানী ও শোকজ করে আসছেন। পাশাপাশি তিনি
বিভিন্ন ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করছেন। এমনকি নিজের বাসভবনে
অবৈধভাবে সরকারি এসি ব্যবহার, ডাক্তার কোয়াটারে তার সমর্থিত আউটসোর্সিং এর
গাড়ি চালককে বসবাসের সুযোগ দেয়া, রংপুরে থাকাকালিন সেখান থেকে সরকারি ল্যাপটপ
নিয়ে আসা, সরকার নির্ধারিত বাসা ভাড়া কর্তন না করা, নিজের স্বার্থে হাসপাতালের ঔষধ
ক্রয়ে ব্যর্থতার কারণে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাওয়া, বর্তমানে ঔষধের চরম সংট সৃষ্টি হওয়া, হাসপাতালের কোটি কোটি টাকার মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি ক্রয়ে পছন্দনীয় ব্যক্তিকে কাজ দিতে ঝালকাঠির প্রত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে ঝালকাঠির বাইরের পত্রিকায় চাপা বিজ্ঞপ্তি দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয় দুর্নীতি কওে যাচ্ছেন তিনি। এসব সংবাদ বিভিন্ন দৈনিক ও প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করে প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেকে সৎ দাবি করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তত্ত¡াবধায়ক ডা. শামিম সরকার তথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ইচ্ছানুযায়ী ছুটির কথা বলে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। যার জন্য তাকে শোকজ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এবার তিনি কি বলবেন? এটাও কি সাংবাদিকদের মিথ্যা অপপ্রচার সেটা দেখার বিষয়।