বরিশালের ৬টি আসনে ২০৮ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ
বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে ৮২৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ২০৮টি কেন্দ্রকে অতি গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলায় এবার মোট ভোটার ২১ লাখ ২৯ হাজার ৯৭৪ জন।
রোববার (৭ জানুয়ারি) জেলার ৮২৭টি ভোটকেন্দ্রের ৪ হাজার ৯শ ৪১টি কক্ষে ভোট দেবেন ভোটারা। জেলার ৬টি আসনের মধ্যে সর্বাধিক ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৩ ভোটার এবং সর্বাধিক ১৭৬টি ভোটকেন্দ্র বরিশাল-৫ (সদর) আসনে। সব কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠিয়েছে নির্বাচন কর্মকর্তারা। আর ব্যালট পেপার কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে ভোট শুরুর আগে।
সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে সবগুলো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।
বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে এবার মোট ভোটার ৩ লাখ ৪ হাজার ৩০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৬ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৪৮ জন। ওই আসনের দুই উপজেলার ১২৯টি কেন্দ্রের ৬৭৮টি কক্ষে ভোট দেবেন ভোটারা।
বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের দুই উপজেলায় এবার মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৪২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮২ হাজার ৩৬৪ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭৭ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ জন। ওই আসনের ১৩৬ কেন্দ্রের ৮৩৮টি ভোট কক্ষে ভোট দেবেন ভোটারা।
বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের দুই উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লাখ ১০ হাজার ১২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৪৫ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৮০ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ জন। ওই আসনের ১২৪ কেন্দ্রের ৭৪৬টি কক্ষে ভোট দেবেন ভোটারা।
বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে এবার মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২২৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২ হাজার ৯৩৫ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৯০ হাজার ২৯১ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ জন। দুই উপজেলার ১৪৯ কেন্দ্রের ৯৬৭টি কক্ষে ভোট দেবেন ভোটারা।
জেলার মধ্যে সর্বাধিক ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৩ জন ভোটার বরিশাল-৫ (সদর) আসনে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৪৯ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ৩২ হাজার ৯১১জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৩ জন। সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৫ আসনের ১৭৬টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৯০টি কক্ষে ভোট দেবেন ভোটারা।
বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে এবার মোট ভোটার ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫১২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৯ হাজার ৬০১ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৮ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৩ জন। ৭ জানুয়ারি ১১৩টি কেন্দ্রের ৬২২টি কক্ষে ভোট দেবেন ভোটারা।
বরিশাল জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ওয়াহেদুজ্জামান জানান, জেলার ৮২৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ২০৮টি কেন্দ্রকে অতি গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সাধারণ কেন্দ্রে পুলিশ এবং আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ জন সদস্য।
বরিশাল জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, সবগুলো কেন্দ্রে সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। দুর্গম ব্যতিত সব কেন্দ্রে ব্যালাট পেপার পৌঁছানো হবে রোববার সকালে ভোট শুরুর আগে। দুর্গম কেন্দ্রে ভোটের সরঞ্জামের সঙ্গেই ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়ে বিরামহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
তিনি আরও বলেন, জেলায় পুরো নির্বাচনী নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। বরিশাল জেলায় ১৭ প্ল্যাটুন বিজিবি, ১০ প্ল্যাটুন সেনাবাহিনীর সদস্য ও সদরে একটি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৬টি আসনে নির্বাচনের মাঠে মোট ৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। যার মধ্যে জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস দুটি আসন থেকে এবং বরিশাল-২ আসনে মনিরুল ইসলাম নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও মনিরুল ইসলাম সরে গিয়ে নৌকাকে সমর্থন দিয়েছেন।
এদিকে ৪৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১৩ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন পুলিশ, আনসার, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশের সদস্যরা। যার মধ্যে প্রতি আসনে র্যাবের ২টি করে ১২টি টহল টিম, মেট্রোপলিটন এলাকায় বিএমপি পুলিশের ১ হাজার ২৮০ জন সদস্য এবং জেলায় জেলা পুলিশের ২ হাজার ১৭৩ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়া ১০ হাজার ৯২ জন আনসার সদস্যের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে ৯ হাজার ৯২৪ জন, সেনাবাহিনীর ৬০৮ জন, বিজিবির ১৭ প্ল্যাটুন, কোস্টগার্ডের ১৫৯ জন নিয়োজিত রয়েছে। যার মধ্যে কোস্টগার্ড নদীবেষ্টিত হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জের ১০টি ইউনিয়নে কাজ করবে।