পুরো বিশ্বকাপেই চোখের সমস্যা নিয়ে খেলেছেন সাকিব
সাকিব আল হাসান বরাবরই সাহসী নেতা। ব্যাটে-বলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পছন্দ করেন দলকে। কিন্তু ২০২৩ বিশ্বকাপে সেই সাকিবকেই একদম অচেনা ঠেকেছে। নিজে ভালো করতে পারেননি, দলও যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স করে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়।
অথচ ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিব পারফরম্যান্সের ঝলকে সবার চোখ কপালে তুলেছিলেন। ব্যাট হাতে ৬০৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ১১ উইকেটও নেন তিনি। বাংলাদেশ ওই বিশ্বকাপে নকআউটে খেললে হয়তো ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টও হওয়ার সুযোগ ছিল সাকিবের।
সেই সাকিব এবার ব্যাটিংয়ে রীতিমত হতাশ করলেন। কী হয়েছিল সাকিবের? ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অবশেষে অজানা এক তথ্য জানালেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সাকিব জানালেন, বিশ্বকাপে স্ট্রেস-রিলেটেড ইস্যুতে (মানসিক চাপ) চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তার।
বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচ ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি সাকিব। বাকি সাত ম্যাচে ২৬.৫৭ গড়ে মোটে ১৮৬ রান করেন। ব্যাটিং নিয়ে তিনি নিজেও এতটাই হতাশ ছিলেন, টুর্নামেন্টের মাঝপথে দেশে এসে ছেলেবেলার মেন্টর নাজমুল আবেদিন ফাহিমের সঙ্গে আলাদা প্র্যাকটিস সেশন করেন সাকিব।
অবশেষে সাকিব জানালেন, তার আসলে কী সমস্যা হচ্ছিল। রোববার ‘ক্রিকবাজ’-এর সঙ্গে আলাপে সাকিব বলেন, ‘আসলে বিশ্বকাপে একটি বা দুটি ম্যাচ নয়, পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই আমার এই সমস্যা ছিল (চোখের)।’
এক চোখে খেলতে এবং ব্যাটিং করতেই কি মূলত সমস্যাটা হয়েছিল কিনা? এমন প্রশ্নে সাকিব বলেন, ‘এটা হতে পারে। বল মোকাবেলা করতে আমার বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল।’
মেডিকেল সায়েন্স বলছে, মানসিক চাপের কারণে মস্তিষ্ক আক্রান্ত হলে সেটা চোখের সমস্যা করতে পারে। স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হলে সেটা সরাসরি দৃষ্টিকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে।
যদিও সাকিব নিশ্চিত নন, মানসিক চাপের কারণেই তার এমনটা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘যখন আমি ডাক্তারের কাছে যাই, আমার কর্নিয়া কিংবা রেটিনায় পানি ছিল। তারা আমাকে ড্রপ দেন এবং বলেন, যাতে স্ট্রেস কমাই। আমি জানি না এটাই কারণ কিনা। তবে আমি যখন আবার আমেরিকাতে (বিশ্বকাপের পর) পরীক্ষা করাই, যখন কোনো স্ট্রেস ছিল না। আমি ডাক্তারকে বলেছিলাম, বিশ্বকাপ যেহেতু শেষ, স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রেস কমে গেছে।’
যদিও এই সমস্যার কারণে অধিনায়কত্বে প্রভাব পড়েছে, সেই অজুহাত দিতে চান না সাকিব। তবে তিনি মনে করেন, যদি তাকে আরও আগে নেতৃত্ব দেওয়া হতো, তবে প্রস্তুত হয়ে যেতে পারতেন।
সাকিবের ভাষায়, ‘আমি যে সমস্যাটায় পড়েছিলাম (অধিনায়ক হিসেবে), আমার চিন্তাভাবনা বা দর্শন যেমন, দলটা সেভাবে প্রস্তুত ছিল না। শুধু বিশ্বকাপই নয়, ২০২৩ সালে আমাদের ওয়ানডে পারফরম্যান্স দেখলেও দেখবেন, এমনিতেও আমরা খুব ভালো খেলিনি।