Home জাতীয় কার কথায় নেচে ‘পাপের ভাগিদার’ হচ্ছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা
ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩

কার কথায় নেচে ‘পাপের ভাগিদার’ হচ্ছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা

নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির ‘আগুন রাজনীতির’ সমালোচনা করে দলটির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কার কথায় নেচে পাপের ভাগিদার হচ্ছেন আপনারা। আপনাদের হুকুম দিচ্ছে আর আপনারা নাচেন। কার জন্য নাচেন, ওতো দেশেই আসে না।

আসন্ন ৭ জানুয়ারির ভোটের প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে শনিবার ৬ জেলার নির্বাচনি জনসভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

এ দিন খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরা, বরিশাল বিভাগের বরগুনা, ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোণা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙামাটি জেলায় সমাবেশ আয়োজন করা হয়। জেলাগুলোর স্টেডিয়াম এবং বিভিন্ন স্কুলের মাঠে এসব সমাবেশ আয়োজন করা হয়।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ভাচুর্য়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন। তিনি ঢাকার তেজগাঁওয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ভবন থেকে যুক্ত হন। পরে এসব স্থানের উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।

নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, “সামনে ইলেকশন। এই ইলেকশন আমরা এবার উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কারণ আমরা চাই জনগণ অংশগ্রহণ করুক, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিক।

“সবাই জনগণের কাছে যাবেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে সে নির্বাচিত হবে। আমি চাই, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হোক এবং জনগণের যে ভোটাধিকার, সেটি তারা প্রয়োগ করতে পারুক। গণতন্ত্রকে আমরা সুরক্ষিত করতে চাই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকলে যে দেশের উন্নতি হয় সেটার প্রমাণ আমরা করেছি।”

তিনি বলেন, বিএনপির নেতা কে সেটাই প্রশ্ন। দুটোই তো সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এরপরও তার ভাই বোন এসেছিল আমার কাছে, মানবিকতার জন্য তাকে বাসায় থাকতে দিয়েছি। আর তারেক জিয়া, যারা আমাকে গ্রেনেড হামলা করে মারতে চেয়েছিল, গুলি করেছে, হামলা করেছে, তারপরও আমরা এই মানবিকতা দেখিয়েছি।

“তার ছেলে হাওয়া ভবন খুলে যত দুর্নীতির আখড়া আর সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বোমাহামলা…আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। এরপর ২০০৭ সালে আর কোনোদিন রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে নাকে খত দিয়ে বিদেশ গিয়ে এখন সেখান থেকে হুকুম দিচ্ছে পুড়িয়ে মানুষ মারার।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপির যারা নেতাকর্মী আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়…আমি বলব যারা পোড়াচ্ছেন পাপের ভাগিদার আপনারাই হবেন। তারেকের কিছুই হবে না। ওতো ওখানে জুয়া খেলে ভালো আছে। আপনাদের হুকুম দিচ্ছে আর আপনারা নাচেন। কার জন্য নাচেন, ওতো দেশেই আসে না। মা মরে মরে, তাকে দেখতেও তো আসে না। এত সাহস থাকলে একবার দেশে এসে দেখুক না। এদেশের মানুষ এই যে হত্যাকাণ্ড এর প্রতিশোধ তারা নেবেই।”

কার কথায় নেচে ‘পাপের ভাগিদার’ হচ্ছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা

এ সময় বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল অভিহিত করে তিনি বলেন, যারা আগুন দিয়ে পোড়ায়…বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল না, এটা একটা সন্ত্রাসী দল। জামায়াত যুদ্ধপরাধীদের দল। এই সন্ত্রাসী ও যুদ্ধপরাধীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। তাহলে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।

“দেশের উন্নয়নের ধারাটি তখনই অব্যাহত থাকবে যখন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তার পছন্দের প্রার্থী বেছে নেবে এবং গণতান্ত্রিক ধারাটি অব্যাহত থাকবে।”

নির্বাচন ঠেকানোর জন্য ২০১৩ সালের মতো বিএনপি আবারও অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাসে ঘুমিয়ে আছে হেলপার তাকে পুড়িয়ে দিল। রেলে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা। একটা মা তার শিশুকে বুকে নিয়ে বসে আছে। সে মা-শিশু পুড়ে কয়লা হয়ে গেল। কারও মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ থাকলে সে এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে না।

বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে না দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপি আর জামায়াতের হাতে কখনও এ দেশ নিরাপদ না। কারণ তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না। কাজেই এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কারণেই ঢাকা থেকে ছয়টি জেলার সঙ্গে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে মতবিনিময় করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে গত ১৫ বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বাবা-মা সব হারিয়ে ফিরে এসেছিলাম এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ণ করতে, দেশ উন্নত করতে। ঘোষণা দিয়েছিলাম এদেশের মানুষই আমাদের পরিবার। তাদের জন্যই আমি নিজেকে উৎসর্গ করেছি।

এ সময় বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশ বিক্রি করতে দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে সেই রাজনীতি আমি করি না। আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে। এদেশের মানুষের জন্যই আমার রাজনীতি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান যেভাবে হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, ঠিক একইভাবে বিএনপির চরিত্র ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত। অত্যাচার নির্যাতনের চিহ্ন এখনও অনেক নেতাকর্মী বয়ে বেড়াচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *