Home ধর্মীয় সংবাদ অন্তরে প্রশান্তি লাভের উপায়
ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩

অন্তরে প্রশান্তি লাভের উপায়

আত্মিক পরিশুদ্ধি ও উন্নতির জন্য ‘শওক ও উনস’ অর্জন করা আবশ্যক। শওক ও উনস তাসাউফ শাস্ত্রের দুটি পরিভাষা। শওকের অর্থ হলো- যেসব ভালো গুণ এখনো অর্জিত হয়নি, সেগুলো অর্জনের জন্য অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া। আর উনস হলো- যেসব উত্তম গুণ অর্জিত হয়েছে তাতে অন্তর প্রফুল্ল থাকা।

যদি মানুষ তার আধ্যাত্মিক জগৎ ঠিক রাখতে চায়, তবে অন্তরে এই দুই আগ্রহ থাকা আবশ্যক। কিন্তু অন্তরের অবস্থা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। কেননা অন্তর্জগতে কখনো কখনো একই সঙ্গে দুটি বিপরীত বিষয় সক্রিয় থাকে। ফলে অন্তরের অবস্থান ঠিক করা কঠিন হয়ে যায়।
যেমন ধরুন, ভালো বিষয় অর্জন করার আগ্রহ প্রশংসনীয়। কিন্তু কারো আগ্রহ যদি সীমা অতিক্রম করে, তবে তার ভেতর অকৃতজ্ঞতা, হিংসা ও বিদ্বেষ তৈরি হতে পারে। ব্যাপারটা যদি এতটুকুতে সীমাবদ্ধ থাকে যে এটা আল্লাহর দান ও অনুগ্রহ। আমি আল্লাহর এই নিয়ামত অর্জন করতে চাই।

তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু আগ্রহের আতিশয্যে যদি সে ভাগ্যের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকে, আল্লাহর দরবারে নিজেকে বঞ্চিত মনে করে, তবে তা অকৃতজ্ঞতা বলে গণ্য হবে। অথবা যদি যে নিয়ামত সে অর্জন করতে পারেনি তা অন্যের কাছে দেখে তার অন্তরের জ্বলন শুরু হয়, তবে সেটা বিদ্বেষ। অকৃতজ্ঞতা ও বিদ্বেষের জন্য মানুষ পরকালে শাস্তির মুখোমুখি হবে।

কেউ যদি ভালো কাজে সন্তুষ্ট হয় এবং এতে অন্তরের প্রশান্তি অনুভব করে, তাহলে এটাকে উনস বলা হয়, যা প্রশংসনীয় ও ঈমানের নিদর্শন।

যেমন হাদিসে এসেছে, যখন তোমার নিজের নেক কাজে আনন্দ হবে এবং মন্দ কাজে দুঃখ হবে, তখন তুমি নিজেকে মুমিন মনে কোরো। (সুনানে তিরমিজি : ২/৩৯)

কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি যদি সীমা লঙ্ঘন করে সে আত্মমুগ্ধতা ও আত্মতৃপ্তির শিকার হয়, তবে তাকে বলা হবে ‘উজুব’ (আত্মমুগ্ধতা)। সম্ভবত এটাই অন্তর মহলের জন্য সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক বিষয়।

‘দিল কি দুনিয়া’ থেকে মুফতি আবদুল্লাহ নুরের ভাষান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *