পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ এমপি ছলিমের বিরুদ্ধে
নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছি) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এবং মহাদেবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ছলিম উদ্দীন তরফদার সেলিমের বিরুদ্ধে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই পরীক্ষা তিনি নিজে দেননি। তাঁর পরীক্ষায় বসেন বদলি একাধিক পরীক্ষার্থী। পরে তিনি এইচএসসি পাসের সনদ নেন।
এ ঘটনায় মহাদেবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম গত ১৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে নওগাঁর পোরশা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি প্রোগ্রামে এমপি মো. ছলিম উদ্দিন তরফদার ভর্তি হন। পরে পরীক্ষায় নিজে অংশ না নিয়ে মহাদেবপুরের তাতারপুর গ্রামের সেকান্দার আলী শেখ, দোহালী গ্রামের খন্দকার আবদুল কুদ্দুস, সফাপুর গ্রামের ফারুক হোসেন, পত্নীতলার গগনপুর গ্রামের তোজাম্মেল হকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে পরীক্ষার খাতা লিখিয়ে এইচএসসি পাসের সনদ নেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই সময় ছলিম উদ্দিন তরফদার নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছি) আসনের এমপি থাকায় প্রভাব খাটিয়ে তিনি এমন অপকর্ম করেন।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী মহাদেবপুর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা শুধু আমি নয়, মহাদেবপুর এলাকার সবাই এভাবে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে জানেন।’
মহাদেবপুর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, এমপির বদলে যারা পরীক্ষায় বসেছেন, তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক।
মহাদেবপুর সদরের আওয়ামী লীগের কর্মী শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাদেবপুরের মানুষ হিসেবে আমরা লজ্জিত। কারণ আমরা একজন অশিক্ষিত লোককে এমপি বানিয়েছি। তিনি ছাত্রজীবনে ঠেলেঠুলে এসএসসি পাস করেছেন। এ বৃদ্ধ বয়সে কি করে এইচএসসি পাস করা সম্ভব? তাই অন্যের সাহায্যে এসএসসি পাস করেছেন।
এমপি বদলি পরীক্ষা দেওয়া মহাদেবপুরের তাতারপুর গ্রামের মো. সেকান্দার আলী শেখ বলেন, ‘আমি যে তাঁর বদলে পরীক্ষা দিয়েছি, এটা আপনাকে কে বলেছে?’ সফাপুর গ্রামের ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমি কারও পক্ষে বদলি পরীক্ষা দিইনি।’
পোরশা ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘আমি ২০১৩ সালে ওই কলেজে যোগদান করি। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে এক দিন আমি তাঁকে (ছলিম উদ্দিন তরফদার) কলেজে দেখেছিলাম।’
এ ব্যাপারে এমপি মো. ছলিম উদ্দিন তরফদারের সঙ্গে কথা বলতে গত তিন দিন তাঁর মোবাইলে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। খুদেবার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
পোরশা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি তিন মাস আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছি। ওই সময়ের কোনো কিছুই আমার জানা নেই।’