মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছেন পুতিন, বাইডেনের বাড়া ভাতে ছাই
ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক রাজনীতির অঙ্গনে বেশ চাপের মুখে পড়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পশ্চিমা দেশগুলোর উপর্যুপরি অবরোধের কারণে টালমাটাল অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল রুশ অর্থনীতি। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে, দোদুল্যমান সেই অবস্থার সব বাধা উতরে ততোই সাফল্য আর শক্তি সঞ্চয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ পশ্চিমা বিশ্বকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রুশ অর্থনীতির যে উত্থান, তার পেছনে অন্যতম কারণ রাশিয়ার তেল বাণিজ্য। পশ্চিমা অবরোধের কারণে রাশিয়ার তেল বিক্রি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে সহায় হয়ে মস্কোর পাশে এসে দাঁড়ায় ভারত ও চীন। পশ্চিমা অবরোধ সত্ত্বেও বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে পেয়ে ট্যাংকারের পর ট্যাংকার রুশ তেল কেনা শুরু করে দেশ দুটি। আর তাতেই ফুলে-ফেঁপে উঠে রাশিয়ার অর্থনীতি।
আর রাজনৈতিকভাবে পুতিনকে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে এক হাত নেওয়ার সুযোগ করে দেয় মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র সৌদি আরব। ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বনেতাদের সম্মতি আদায়ে কাজ করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বাইডেনের সেই বাড়া ভাতে ছাই দেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
পরীক্ষিত এই মিত্রের সঙ্গে বৈঠক করতেই এবার রাশিয়া থেকে উড়ে রিয়াদে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের কথা রয়েছে তার। চলতি সপ্তাহেই পুতিনের এই সফর অনুষ্ঠিত হতে পারে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাসের বরাত দিয়ে সোমবার রাতে এক প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন। তারপর সেখান থেকে সৌদি আরব যাবেন তিনি। সেখানে প্রধানত ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে আলোচনা হবে পুতিনের। ক্ষমতাধর প্রিন্সের সঙ্গে এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ক্রেমলিন।
পুতিনের এই সফরের খবর এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন গেল বৃহস্পতিবার জ্বালানি তেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস স্বেচ্ছায় দৈনিক তেল উৎপাদন কমাতে সম্মত হয়েছে। ওপেক প্লাসের এই ঘোষণার পর গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ২ শতাংশ পড়ে যায়। সোমবার আরও কমে যায় জ্বালানি তেলের দাম। রাশিয়ার পাশাপাশি আমিরাত ও সৌদি আরবও ওপেক প্লাসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ধারণা করা হচ্ছে, পুতিনের সফরকালেই বৈশ্বিক তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে ওপেক প্লাস।